মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আজকের পোস্টটি পড়ুন। যারা গর্ভাবস্থায় আছেন, অথবা যাদের স্ত্রী বা মা গর্ভাবস্থায় আছেন এবং তারা ভাবছেন কিভাবে অনলাইনে মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন করবেন, মোট কত টাকা পাবেন এবং সেই টাকা কিভাবে হাতে পাবেন – এই সব বিষয়ে বিস্তারিত জানুন।
Table of Contents
মাতৃত্বকালীন ভাতা বলতে কি বুঝায়
মাতৃত্বকালীন সময়ে বা গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। সঠিক চিকিৎসার জন্য হতদরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে বাংলাদেশ সরকার। আপনি যদি এই ভাতা পেতে চান তবে আপনাকে সঠিকভাবে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আসুন জেনে নিই এই ভাতা পাওয়ার জন্য যোগ্যতা এবং আবেদন করার পদ্ধতি।
কিভাবে মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করবেন
মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আপনি দুটি উপায়ে আবেদন করতে পারবেনঃ প্রথম উপায় হল, সরাসরি অফিসে গিয়ে আবেদন এবং দ্বিতীয়টি হল, মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইন আবেদন। সরাসরি আবেদন করতে চাইলে আপনাকে অনলাইন থেকে ফরম সংগ্রহ করতে হবে অথবা কাছের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অফিস থেকে গর্ভকালীন সেবার কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
তারপর সকল তথ্য পূরণপূর্বক প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করতে হবে। ফরমে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যে কোনো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেমনঃ বিকাশ, রকেট বা নগদ একাউন্ট থাকতে হবে। তারপর সকল ডকুমেন্ট সমাজসেবা কার্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অফিস বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জমা দিতে হবে।
অনলাইনে মাতৃত্বকালীন তার আবেদন করার নিয়ম
আপনি চাইলে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজে ঘরে বসে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। তবে এর জন্য আগে থেকেই আপনার মোবাইল ফোনে কিছু ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হবে। যেমন আপনার এনআইডি কার্ডের স্ক্যান কপি, স্বাক্ষর এবং ANC কার্ডের স্ক্যান কপি। এগুলো প্রস্তুত থাকলে ঘরে বসে কয়েকটি ধাপে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।
অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রথমে চলে আসুন এই ঠিকানায়ঃ http://103.48.16.6:8080/LM-MIS/applicant/onlineRegistration. অথবা যে কোন ব্রাউজারের সার্চ বক্সে গর্ভবতী ভাতার অনলাইন আবেদন লিখে সার্চ দিন। তাহলে আপনি নিজের মতো একটি ফর্ম দেখতে পাবেন।
এখন আপনার সকল তথ্য দিয়ে ফর্মটি ভালোভাবে পূরণ করুন। যেমনঃ ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা, আর্থ-সামাজিক তথ্য, পেমেন্টের তথ্য, ছবি ও স্বাক্ষর সংযুক্তি ইত্যাদি সবগুলো তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। মনে রাখবেন, এই আবেদন অবশ্যই মাসের ১ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে করতে হবে। যাই হোক, সব তথ্য পূরণ করা হয়ে গেলে নিচে থাকা সংরক্ষণ করুন বাটনে ক্লিক করুন।
তাহলে আপনার মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদনটি দাখিল হয়ে যাবে। এখন কর্তৃপক্ষ আপনার সকল ডকুমেন্ট যাচাই বাছাই করবে। যদি আপনি এই ভাতার যোগ্য বলে বিবেচিত হন, তাহলে আপনাকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ভাতার টাকা প্রদান করা হবে। আপনি চাইলে আবেদনের পর আবেদনের কপিটি প্রিন্ট করে সমাজ সেবা অফিসে জমা করতে পারেন, এতে আপনার আবেদন অধিকতর বিবেচিত হবে। এভাবে আপনি মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করার জন্য কি কি প্রয়োজন
মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করতে হলে নিন্মোক্ত বিষয়গুলি প্রযোজ্য হবেঃ
- প্রতি মাসের ১ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
- গর্ভকালীন সময় চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত হতে হবে।
- গর্ভবতী মায়ের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- (ANC) কার্ড থাকতে হবে (মাতৃত্বকালীন টিকা কার্ড)।
- ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
- প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তানের জন্য এই ভাতা কার্যকর হবে।
মাতৃত্বকালীন ভাতায় কত টাকা দেয়
এতক্ষণ আমরা মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করার নিয়ম জেনেছি। এখন অনেকে জানতে চান মাতৃত্বকালীন ভাতা বা মাতৃত্বকালীন বেতন কত টাকা। ২০২৪ সালে প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে ছয় মাস অন্তর অন্তর মোট চার বার দুই বছর (২৪ মাস) এই ভাতা প্রদান করা হবে। অর্থাৎ একজন মা মাতৃত্বকালীন ভাতা হিসাবে বছরে ৯,৬০০ টাকা করে দুই বছরে মোট ১৯ হাজার ২০০ টাকা পাবেন।
মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যাবে
আপনার মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন অনুমোদিত হলে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়া যাবে। এই ভাতার অর্থ প্রতিমাসে আপনার দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে পেমেন্ট করা হবে। খেয়াল রাখবেন, আবেদন করার সময় যে এই মোবাইল ব্যাংকিং এর মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন সেটা যেন খোলা থাকে।
আশাকরি, এই আর্টিকেলটি পড়ে মাতৃত্বকালীন ভাতার অনলাইন আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন। মাতৃত্বকালীন তার আবেদন সম্পর্কে যারা জানতে চায় তাদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।