কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া যায়

কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া, কাজের জন্য যাওয়া কিংবা বিদেশে ভ্রমণ করার স্বপ্ন অনেকের। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই ভিসা প্রাপ্তি ও ভ্রমণ ব্যয় সম্পর্কে তেমন ধারণা রাখেন না। আজকের ব্লগে আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশ থেকে কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া যায়, কোন দেশের ভিসার দাম কত, এবং ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া সহজ।

কম টাকায় কোন দেশে যাওয়ার উপায় কি

বাংলাদেশ থেকে কম টাকায় বিদেশ যাওয়া সম্ভব যদি আপনি কিছু কৌশল মেনে চলেন। প্রথমত, সঠিক ভিসা প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিশ্চিত করতে হবে। ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করার আগে নিশ্চিত করুন যে আপনার পাসপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ভ্রমণ পরিকল্পনা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক রয়েছে।

স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে, সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করুন এবং তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন। কাজের ভিসার জন্য অবশ্যই চাকরির অফার লেটার এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাগজপত্র জমা দিন।

কম খরচে বাংলাদেশ থেকে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়

বাংলাদেশ থেকে কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ওমান এবং ইউরোপের কিছু দেশ। এসব দেশগুলোতে যেতে কেমন টাকা খরচ হয় সেটার ব্যাপারে নিচে বর্ণনা করা হলো।

ভারত

বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় ভারত সবচেয়ে কম খরচে যাওয়া যায়। ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারত যেতে সর্বনিম্ন ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা খরচ হয়।

মালয়েশিয়া

বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়াতে যেতে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়। এছাড়া মালয়েশিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসা ও ট্যুরিস্ট ভিসা সহজেই পাওয়া যায়।

সৌদি আরব

বাংলাদেশ প্রবাসীরা সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠান। অধিকাংশ বাংলাদেশী সৌদি আরবে কাজের ভিসা নিয়ে যান। এর জন্য ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা খরচ হয়।

কাতার

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কাতার সরকারিভাবে শ্রমিক আমদানি করে। কাতারে যেতে ৪.৫ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়।

কুয়েত

মধ্যপ্রাচ্যের আরো একটি শ্রমবাজার কুয়েতের কাজের ভিসা নিয়ে যেতে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়।

ওমান

ওমানে কাজের ভিসার জন্য প্রায় ৪.৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়। এখানে টাকার মানও বেশি।

কোন দেশের ভিসার দাম কত ২০২৪

কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া যায় – এটার বিস্তারিত জানার জন্য আমরা এখন জানবো কোন দেশে ভিসার দাম কত। আগেই বলে রাখি, সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন দেশের ভিসার খরচ পরিবর্তন হতে পারে।

তবে সাধারণত বিভিন্ন দেশের ভিসার জন্য খরচ নির্ধারিত হয় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অভিবাসন নীতির ওপর ভিত্তি করে। যেমন, ভারত এবং নেপালের মতো পার্শ্ববর্তী দেশগুলির ভিসা খরচ কম।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কাজের ভিসার খরচ বেশি হলেও তুলনামূলকভাবে বেশি আয়ের সুযোগ রয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোতে ভিসার খরচ কম হলেও তাদের জীবনের মান উন্নত হওয়ায় প্রায় সবাই ইউরোপের শরণাপন্ন হয়।

কম খরচে ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া যায়

বর্তমানে ইউরোপের যে দেশগুলোতে কম খরচে যাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাল্টা, পর্তুগাল, হাঙ্গেরি, এবং লিথুনিয়া।

মাল্টা

মাল্টা ইউরোপের শেনজেনভুক্ত দেশ হওয়ায় এখান থেকে অন্য শেনজেনভুক্ত দেশে সহজেই যাওয়া যায়। মাল্টায় কাজের জন্য ভিসা পেতে ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয়।

পর্তুগাল

পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়া সবচেয়ে সহজ এবং কাজের জন্য ভিসা পাওয়া সহজ। পর্তুগালে যেতে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয়।

হাঙ্গেরি

কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া যায় সেটার ব্যাপারে আরও জানার জন্য আমরা এখন জানবো হাঙ্গেরির ভিসা খরচ সম্পর্কে। হাঙ্গেরিতে স্টুডেন্ট ভিসা ও কাজের ভিসা পাওয়া সহজ। এখানে যেতে খরচ হয় ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা।

লিথুনিয়া

লিথুনিয়ার শিক্ষার হার ৯৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি স্টুডেন্ট ভিসা সুবিধা পাওয়া যায়। লিথুনিয়াতে কাজের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হলেও স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ।

ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া সহজ

ইউরোপে কম টাকায় কোন দেশে যাওয়া যায় তার মধ্যে ফ্রান্স, পর্তুগাল, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং হাঙ্গেরি উল্লেখযোগ্য। ফ্রান্সে ট্যুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ।

পর্তুগালে কাজের ভিসা এবং নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ। মাল্টায় কাজের ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায় সহজেই। নেদারল্যান্ডসের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ। সুইজারল্যান্ডে ট্যুরিস্ট ভিসা পাওয়া সহজ, কিন্তু কাজের জন্য ভিসা পাওয়া কিছুটা কঠিন।

শেষ কথা

কম খরচে বিদেশ ভ্রমণ কিংবা কাজের জন্য যাত্রা করা সহজ নয়, তবে সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকলে তা সম্ভব। যেকোনো ভিসা প্রক্রিয়া সফল করতে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও শর্তাবলী পূরণ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ কম খরচে ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ওমান এবং ইউরোপের কিছু দেশে যেতে পারেন।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভিসা পাওয়া সহজ হলেও সঠিক তথ্য ও প্রয়োজনীয়তা জানা অত্যন্ত জরুরি। তাই ভ্রমণ বা কাজের উদ্দেশ্যে যেকোনো দেশে যাত্রা করার আগে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করুন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন।