জেনে নিনি ভোটার হতে কি কি লাগে

ভোটার হতে কি কি লাগে
বর্তমানে প্রায় সব কাজে ভোটার আইডি কার্ড বা NID কার্ড লাগে

আমাদের সকলেরই জানা উচিত যে ভোটার হতে কি কি লাগে। একজন ব্যক্তির জন্য এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া অত্যন্ত জরুরী বিষয়। প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে নানান কর্মকাণ্ডে এনআইডি অত্যাবশ্যকীয়। তবে অনেকেই এমন আছেন, যারা জানেন না এনআইডি কার্ড পাওয়া বা ভোটার হওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্টস বা ভোটার হতে কি কি লাগে। আজকের এই ব্লগ লেখাটি সেই সব মানুষদের জন্য লেখা। এই ব্লগ পোষ্টে আমরা আলোচনা করব নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো যেমন- ভোটার হতে গেলে কত খরচ হবে, সহজে এবং কীভাবে ভোটার হওয়া যায় এবং এর জন্য কোথা থেকে শুরু করতে হবে সে সম্পর্কে।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে বা কি কি ধরণের কাগজপত্র লাগে

আপনি যদি বাংলাদেশী ও প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন এবং নিজের পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড তৈরি চান তাহলে নিম্নোক্ত কাগজপত্র গুলো আব্যশক। নিচে দেখে নিন ভোটার হতে কি কি লাগেঃ

  • অনলাইন আবেদন ফরম
  • নাগরিক সনদ
  • সার্টিফিকেট
  • জন্ম সনদের ফটোকপি
  • রক্তের গ্রুপ রিপোর্ট
  • প্রত্যয়ন পত্র
  • অঙ্গীকার নামা
  • স্বামী বা স্ত্রীর NID কপি
  • পিতা-মাতার NID কপি
  • বিদ্যুৎ, পানি বা গ্যাস বিল কপি
  • কাবিননামা (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)

কখন এনআইডি কার্ড জরুরি

বাংলাদেশের একজন সাধারণ ও প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য এনআইডি কার্ড যে সমস্ত কাজে লাগে সেগুলো হলো নিম্নরূপঃ

  • নতুন সিম রেজিস্ট্রেশন
  • ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেন
  • পাসপোর্ট তৈরি
  • ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেইস
  • যেকোন লাইসেন্স তৈরি
  • ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে
  • চাকরি দাতা প্রতিষ্ঠানে
  • বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন
  • টিন সার্টিফিকেট করার জন্য
  • বিকাশ, রকেট ও নগদ একাউন্ট তৈরি
  • আইনি জটিলতা নিরসন করার জন্য
  • ব্যাংক একাউন্ট করা
  • জমি ক্রয়-বিক্রয়
  • ভূমিকর পরিশোধ করার জন্য
  • সরকারি ভাতা পেতে
  • নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ

ভোটার হতে কি কি লাগে

উপরিউক্ত ডকুমেন্টগুলো সবার ক্ষেত্রে যে প্রযোজ্য হবে, এমনটা নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিন্মোক্ত ডকুমেন্টগুলো আব্যশকঃ

  • ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • জব আইডি কার্ড
  • পাসপোর্ট কপি (প্রবাসী)
  • প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী সনদপত্র

ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বা NID কার্ড পেতে উক্ত ডকুমেন্ট গুলো জমা দিলে আপনার NID আবেদনপত্র গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। মনে রাখবেন, ভোটার হতে কোন টাকা লাগে না, এটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যায়। তাই ভোটার হওয়ার জন্য বা NID কার্ড পাইয়ে দেওয়ার জন্য যদি কেউ অর্থ দাবি করে তাহলে প্রমাণ সহ আপনি নিকটস্থ থানা বা জাতীয় হেল্পলাইন ৯৯৯ এ কল করতে পারেন। ভোটার হতে কি কি লাগে এটা আমাদের প্রায় সকলের জিজ্ঞাস্য একটা প্রশ্ন। আশা করছি পুরো পোষ্ট পড়ার পর যেকেউ বুঝতে পারবে তার ভোটার হতে কি কি লাগে।

NID সম্পর্কিত সচরাচর জিজ্ঞাসিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাবলী

এখন আমরা এনআইডি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কতকগুলো প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো জেনে রাখলে আপনার এনআইডি তৈরি বা ভোটার হতে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবেন না। অন্যদের চেয়ে এই বিষয়ে আপনি আরো বেশি জানবেন।

প্রশ্নঃ যথা সময়ে ভোটার হতে পারিনি এখন কি করব?
উত্তরঃ আপনি যদি যথা সময়ে ভোটার হতে না পারেন তাহলে পরবর্তীতে যেকোন সময় সংশ্লিষ্ট থানা, জেলা বা উপজেলা নির্বাচন অফিসে উপযুক্ত কারণ উল্লেখপূর্বক আবেদন করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ ভোটার হওয়ার পর ID কার্ড কোথা থেকে সংগ্রহ করব?
উত্তরঃ যেই এলাকায় ভোটার হয়েছেন উক্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ID কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ ভোটার হওয়ার সময় অরিজিনাল নামের সাথে বংশগত কোন খেতাব, পদবী বা উপাধি দেওয়া যাবে কিনা?
উত্তরঃ না, ভোটার নামের সাথে অরিজিনাল নাম ছাড়া অন্যকিছু সংযুক্ত করার সুযোগ নেই।

প্রশ্নঃ কেউ বিদেশ চলে গেলে অন্য কেউ/স্ত্রী আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবে কিনা?
উত্তরঃ হ্যাঁ, পারবে। তবে এই ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির যথাযথ পরিচয়পত্র জমা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ কেউ যদি ভুলে দুইবার আবেদন করে তাহলে করণীয় কি?
উত্তরঃ যদিও এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ কিন্তু যেহেতু আপনি ভুলে কাজটি করেছেন তাই যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিসে কারণ উল্লেখ করে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা জানান। তবে যেহেতু পুরো কাজটা সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা হয় তাই ডুপ্লিকেট এন্ট্রি নেয়না। অর্থাৎ আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার, পিতা-মাতার NID দিয়ে যদি পুনরায় আবেদন করেন তাহলে সফটওয়্যার সেটা নিবেনা।

প্রশ্নঃ বিভিন্ন জয়গায় আমার বয়স/নাম ভিন্ন ভিন্ন, এক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ডে কোনটি দিব?
উত্তরঃ আপনি যদি পড়ালেখা করে থাকেন তাহলে আপনার সার্টিফিকেটের আলোকে আইডি নাম ব্যবহার করুন। আর যদি অশিক্ষিত হন তাহলে জন্ম নিবন্ধনের আলোকে সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করুন।

প্রশ্নঃ আবেদন করার কতদিন পর কার্ড পাওয়া যায়?
উত্তরঃ  এটা নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের উপর। সাধারণতঃ কার্ড হাতে পেতে ৩ মাস থেকে ১/১.৫ বছরও লেগে যেতে পারে।

ভোটার হতে কি কি লাগে এই প্রশ্নটা আপনার মত আপনার বন্ধু-বান্ধব বা ভাই-বোনদেরও জানা লাগতে পারে, ভোটার হতে কি কি লাগে এই পোস্টটি তাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

 

Picture of Ali Hayder

Ali Hayder

আমি আলী হায়দার, সাইবার সেবা'র একজন নিমিত ব্লগার। অনলাইন আর্নিং, আইটি প্রফেশন, কম্পিউটার, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি বিষয়ের উপর আমার ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। এই ওয়েবসাইটে ই-সার্ভিস নিয়ে নিয়মিত লেখা-লেখি করছি।

ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/alihayder2050/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *