কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করব

কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করব-cybersheba.com
এখন অনলাইনের মাধ্যমেও ভোটার এন.আই.ডি কার্ড সংশোধন করা যায়।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য মাত্র কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন। ভোটার আইডি বা NID কার্ড একটি ব্যক্তিগত জাতীয় পরিচয়পত্র, যেটি একজন ব্যক্তির নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট বা ব্যক্তি শনাক্তকারী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমাদের প্রায় সব কাজে এটার ব্যবহার হয়ে থাকে, যেমনঃ

  • পড়াশোনা বা উচ্চশিক্ষা
  • ব্যক্তিগত পরিচয়
  • বিয়ে-শাদি
  • গাড়ীর কাগজ-পত্র তৈরী
  • পাসপোর্ট বা ভিসা
  • জমি ক্রয়-বিক্রয়
  • ব্যাংকিং লেনদেন
  • ব্যবসা বানিজ্য
  • Tin সার্টিফিকেট তৈরি
  • প্রতিষ্ঠান নির্মাণ
  • চাকুরি
  • নগদ অর্থ লেনদেন
  • মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি।

তাই এটার কোন ভুল তথ্য সংশোধন করা একান্তই জরুরী। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় NID ভুল বা তথ্যের গরমিল। যার কারণে দৈনন্দিন জীবন যাপনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা জরুরী। আসুন জেনে নিই কিভাবে NID কার্ডের বিভিন্ন ভুল তথ্য সংশোধন করা যায়। সাধারণত আমাদের NID কার্ডে যে ভুল গুলো দেখা যায় তা হলোঃ-

  • ব্যবহারকারীর নামের বানান বা উপাধিতে ভুল
  • বাংলা ও ইংরেজী নামের মধ্যে মিল নাই
  • পিতা বা মাতার নামের বানান ভুল
  • NID জন্ম তারিখে ভুল ইত্যাদি।

আপনিও যদি ওপরের কোন একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। আজ আমরা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ব্যাপারে আলোকপাত করব।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য কোন কোন ডকুমেন্টস লাগে

আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চান তাহলে আপনার নিকট অব্যশই কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা লাগবে। যা নিচে তুলে ধরা হলঃ-

  • পিতা-মাতার আইডি কার্ড
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কপি, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • চাকুরীজীবি হলে সার্ভিস বইয়ের কপি বা এমপিও শীট ইত্যাদি

উল্লেখিত ডকুমেন্ট গুলোর যেকোন দুটি ডকুমেন্ট দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা যায়। তবে তথ্য সংশোধনের ধরণের ওপর নির্ভর করে যে আপনার ক্ষেত্রে কোন ডকুমেন্ট গুলো প্রযোজ্য হবে।

এনআইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে যে সমস্ত কাগজ-পত্র প্রয়োজন

এনআইডি কার্ডের জন্ম তারিখে সংশোধন করার জন্য নিন্মোক্ত কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন হবেঃ

  • অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • SSC বা HSC অথবা সমমানের সনদ
  • পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • বিবাহের কাবিন নামা
  •  সার্ভিস বহি বা এমপিও সিট

এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে যেসব কাগজ-পত্র লাগবে

  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • SSC বা HSC অথবা সমমানের সনদ বা সার্টিফিকেট
  • পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটো কপি
  • বিবাহের কাবিন নামা
  • সার্ভিস বইয়ের কপি বা এমপিও শীট
  • কমপক্ষে ২ জন সন্তানের NID card এর ফটোকপি যেখানে পিতা-মাতার নাম শুদ্ধ আছে।
  • জাতীয় পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি
  • ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌর সিটি কর্পোরেশন হতে নামের প্রত্যয়নপত্রের কপি।

এনআইডি কার্ডের পিতা-মাতার নাম সংশোধন করতে যা প্রয়োজন হবে

  • SSC বা HSC অথবা সমমানের সনদ
  • পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধ সনদ
  • চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে প্রতাষ্ঠানিক সনদপত্র
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ

যেভাবে এনআইডি আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করবেন

এজন্য আপনাকে প্রথমে থানা, জেলা বা উপজেলা অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ফরমটি সংগ্রহ করতে হবে। তারপর সর্তকর্তার সাথে ফর্মটি পূরণ করুন এবং যাবতীয় ডকুমেন্ট ফর্মটির সাথে পিন-আপ করে যুক্ত করে নিন। তারপর সেটা উপজেলা অফিসের দায়িত্বশীল ব্যক্তির নিকট জমা দিন। এরপর মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমে অর্থাৎ বিকাশ বা রকেটের মাধ্যে সংশোধন ফি পরিশোধ করতে হবে। সংশোধন ফি পরিশোধ করার পর আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন কার্যক্রম শুরু হবে।

কিভাবে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করবেন

প্রথমে আপনার ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করুন। তারপর যেকোন ব্রাউজার থেকে চলে আসুন এই ঠিকানায়। তারপর প্রথম পেইজে একাউন্ট রেজিস্টার অপশন দেখতে পাবেন।
কিভাবে-ভোটার-আইডি-কার্ড-সংশোধন-করব
রেজিষ্টার অপশনের নিচে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার বা ফর্ম নাম্বার দিন। একই সাথে জন্ম তারিখ, সাল, মাস ইত্যাদি তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে নিম্নের ক্যাপচাটি পূরণ করে সাবমিট করুন।

৩য় ধাপে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে বসিয়ে দিন। তারপর পরবর্তী ধাপে ক্লিক করুন।

৪র্থ ধাপে আপনাকে একটি ফোন নাম্বার দিতে হবে, সেটাতে একটি ওটিপি কোড পাঠিয়ে আপনার পরিচিতি নিশ্চিত করুন।

যদি দেখানো ফোন নাম্বারটি আপনার কাছে না থাকে তাহলে ২য় অপশনে মোবাইল পরিবর্তন অপশন পাবেন। সেখান থেকে পরিবর্তন করে কোড যাচাই করে মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করে নিন।

NID Wallet অ্যাপস দিয়ে এনআইডি কার্ড যাচাই

৫ম ধাপে গুগল প্লেস্টোর থেকে আপনাকে NID Wallet নামক একটি অ্যাপস ইন্সটল করতে হবে। ইনস্টল করার পর NID Wallet অ্যাপটি আপনার ফেইসকে যাচাই করবে আপনি অর্জিনাল ব্যক্তি কিনা। এজন্য App টি ওপেন করে ফেইস স্ক্যানে ক্লিক করে আপনার ঘাড়টা এদিক-ওদিক ঘুরাঘুরি করতে হবে। তাহলেই আপনার ফেইসটি সফলভাবে নিয়ে নিবে। ওই সময় স্ক্রিনে ঘা কোন দিকে কিভাবে নড়াতে হবে সেটা লেখা উঠবে, সেই নির্দেশনা মত করতে হবে।

ফেইস দেওয়ার সাথে সাথে NID Wallet এপ NID ও ফেইসের সাথে মিল চেক করা শুরু করবে। সঠিক ব্যাক্তি যদি ফেইস দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার এনআইডি’র সকল তথ্য ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হবে। এবারে এগিয়ে যান অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে চলে যান।

৬ষ্ঠ ধাপে আপনার প্রোফাইলে যেতে হবে। সেখানে গেলে নিচের ছবির মত আপনার পুরনো সকল তথ্য বাংলা ও ইংরেজিতে দেখানো হবে।
এখান থেকে আপনি যদি কোন তথ্য পরিবর্তন করতে চান তাহলে এডিট অপশনে ক্লিক করে বহাল অপশনে ক্লিক করুন এবং প্রয়োজন মত তথ্য পরিবর্তন করুন। আপনি যেই তথ্যটি সংশোধন করতে চান তার ওপরের ছোট্ট টিক চিহ্নটি ক্লিক করে দিন। তারপর তথ্য সম্পাদনা বা পরিবর্তন করুন। সঠিক তথ্য দিয়ে সম্পাদনা করার পর একদম ওপরে এসে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।

৭ম ধাপঃ এই ধাপে এখন আপনার তথ্য সংশোধনের আবেদনটি চুড়ান্ত করার জন্য আপনাকে সংশোধনীয় ফি পরিশোধ করতে হবে। আপনি চাইলে রকেট বা বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে সংশোধনী ফি পরিশোধ করতে পারেন।

বিঃদ্রঃ আপনার যদি বিকাশ একাউন্ট না থেকে থাকে তাহলে অন্য কারো একাউন্ট থেকে অথবা বিকাশ এজেন্ট থেকে আপনার ফি পরিশোধ করতে পারবেন। এজন্য শুধু মাত্র সাথে NID কার্ডটি নিয়ে যাবেন।

খেয়াল করুন, অনেকে মনে করেন- বয়স, নাম, সাল, রক্তের Group এসব পরিবর্তনের আবেদন ভিন্নতর। এটা একদম ভুল ধারণা। মূলত সবগুলো সম্পদনা বা সমস্যার সমাধান এই একই সিস্টেম মেনে হয়ে থাকে।

যেভাবে ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধনী ফি পরিশোধ করবেন

প্রথমে নগদ বা বিকাশ অ্যাপ থেকে পে বিল অপশনে চলে আসুন। তারপর NID services (সরকারি ফি) অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আবেদনের ধরণ নির্বাচন করুন।

এখানে প্রথম অপশনটি সিলেক্ট করুন NID info correction এবং নিচে NID কার্ডের নাম্বার বসিয়ে পে বিল করতে এগিয়ে যান অপশনটাতে ক্লিক করুন। আপনি দেখতে পাচ্ছেন সংশোধনী ফি ২৩০ টাকা। আপনার বিকাশে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে (পরের ধাপে যেতে ট্যাপ করুন)  অপশনে ক্লিক করে আপনার বিকাশ পিন কোড দিলে আপনার একাউন্ট থেকে সফল ভাবে ফি পরিশোধ হয়ে যাবে এবং আপনি কিছুক্ষণের মধ্যে মেসেজ পেয়ে যাবেন।

৮ম ধাপঃ আপনার ভোটার আইডি কার্ডর তথ্য সংশোধন করতে আবারও পুনরায় ওয়েবসাইটে ফিরে আসুন। যদি লগ-আউট হয়ে যায় তাহলে আপনার NID নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিয়ে পুনরায় লগিন করে নিন। লগিন করার পর যদি কোন টাকার পরিমান না দেখতে পান, তাহলে পেইজটা ২/১বার রিলোড দিন, তাহলে দেখতে পাবেন ২৩০ টাকা আপনার একাউন্টে জমা হয়ে গেছে। এখন আবারও যেই তথ্যটি পরিবর্তন করেছেন সেটি দেখে নিন। তারপর টিক চিহ্ন তুলে ওপরের পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।

এবার একটু নিচে থেকে আবেদনের ধরণ নির্বাচন করুন। Regular অথবা Smart card. তারপর পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। এখন আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে বলবে। তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের PDF কপি বা ক্লিন ছবি তুলে সেই গুলো যুক্ত করুন।

এই পোস্টের উপরের দিকে বলে দেওয়া হয়েছে কোন আবেদনে কি কি ডকুমেন্ট যুক্ত করতে হবে, সেটি ফলো করে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করুন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার গুরুত্ব

ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র একটি ব্যক্তির পরিচিতি প্রমাণীকরণের অন্যতম মাধ্যম। এই নথিটি বিভিন্ন প্রশাসনিক, আইনি, এবং অর্থনৈতিক লেনদেনের ভিত্তি প্রদান করে। এনআইডি কার্ডের সঠিক এবং আধুনিক তথ্য থাকা অত্যন্ত জরুরি কারণ এটি সরকার এবং অন্যান্য অফিসিয়াল সংস্থাগুলির সাথে যোগাযোগের মৌলিক হাতিয়ার। সংশোধন করা না গেলে, অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্যের কারণে গুরুতর ভোগান্তি এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।

ভোটার আইডি কার্ডে সঠিক তথ্যের প্রত্যাবশ্যকতা কেন মৌলিক একটি বিষয়, তা নিম্নরূপ:

১. নির্বাচনী অধিকারঃ এনআইডি কার্ড আপনার নির্বাচনী অধিকারের প্রমাণ। তথ্যে ত্রুটি থাকার ফলে, নির্বাচনের দিন আপনার ভোটাধিকার প্রার্থনায় বিঘ্নিত হতে পারে।

২. অফিসিয়াল কাজঃ সঠিক তথ্য ব্যতীত রাষ্ট্রীয় সেবা, ব্যাংকিং লেনদেন, পাসপোর্ট আবেদন, সিম রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি কাজে অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে।

৩. সামাজিক নিরাপত্তাঃ ভুল তথ্যের কারণে অন্য কেউ আপনার পরিচয় দিয়ে

অপরাধ করতে পারে যা আপনার সামাজিক নিরাপত্তা বিঘিœত করতে পারে। এনআইডি কার্ডের কোন তথ্যে ভুল থাকা মানে অপরাধীদের জন্য আপনার পরিচয় চুরি করা সহজ হয়ে যায়, যা আপনার ব্যক্তিগত অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত আনতে পারে।

৪. আর্থিক স্থিতিশীলতাঃ ব্যাংক লোন, বীমা, এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক চুক্তিগুলির জন্য সঠিক এনআইডি তথ্য প্রয়োজনীয়। ভুল তথ্য আপনার আর্থিক চুক্তি বাধাগ্রস্থ করতে পারে।

৫. সাংস্কৃতিক অনুকূলতাঃ নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা ইত্যাদি ভুল থাকলে পরিচয়ের সংকট সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরণের অনুকূলতার অভাব নাগরিকের সামাজিক অধিকারে বাধা হতে পারে।

আপনার ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন হলো আপনার দায়িত্ব, এবং আপনার পরিচয়ের সঠিকতা নিশ্চিত করা উচিত। সংশোধন করার প্রক্রিয়াটি আজকাল আরও সহজ এবং ডিজিটাল হয়ে গেছে, তাই প্রযুক্তির সুযোগ গ্রহণ করে আপনি নিজের এবং আপনার পরিবারের এনআইডি কার্ডের যথাযথ সংশোধন সম্পন্ন করা বুদ্ধিমানের কাজ।

Picture of Ali Hayder

Ali Hayder

আমি আলী হায়দার, সাইবার সেবা'র একজন নিমিত ব্লগার। অনলাইন আর্নিং, আইটি প্রফেশন, কম্পিউটার, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি বিষয়ের উপর আমার ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। এই ওয়েবসাইটে ই-সার্ভিস নিয়ে নিয়মিত লেখা-লেখি করছি।

ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/alihayder2050/

2 Responses

    1. এনআইডি সংশোধন করার জন্য আপনি যদি কোন সমস্যায় পড়েন তাহলে আমাদের জানাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *