অনেক শিক্ষকই জানেন না উপবৃত্তি পোর্টালে ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT কিভাবে ঠিক করতে হয়। সরকারি পদ্ধতিতে প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রদের প্রতি ছয় মাস অন্তর উপবৃত্তির অর্থ প্রদান করা হয়। তথ্যে ভুল থাকায় কখনো কখনো এই অর্থ প্রদান আটকে যায়। এই ধরনের ভুলের জন্য যে সমস্ত ছাত্রদের অর্থ পাওয়া আটকে গেছে, তাদের তথ্য আইবাস প্লাস (IBAS) থেকে উপবৃত্তি পোর্টালের পে-রোল বিভাগে ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT হিসেবে ফেরত দেওয়া হয়।
প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ তাদের ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ওই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের তথ্য পুনঃসম্পাদনা করে ভুল শুধরে দিতে পারেন। আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের দেখাব কিভাবে ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT সঠিক পদ্ধতিতে ঠিক করতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখি কিভাবে আপনি এই কাজটি নিজে করতে পারেন।
সহজ উপায়ে ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT ঠিক করার নিয়ম
প্রথমে আপনার হাতে থাকা স্মার্ট মোবাইল অথবা আপনার ল্যাপটপ ওপেন করে ইন্টারনেট সংযোগ দিন। অপেরা, মজিলা ফায়ারফক্স অথবা গুগল ক্রোম ব্রাউজার ওপেন করে এড্রেস বারে pesp.finance.gov.bd এই ঠিকানাটা লিখুন এবং ইন্টার বাটনে চাপ দিন। আপনি এরকম একটা পেইজে আসবেন।
এবার আপনি আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। বাম পাশে ড্যাশবোর্ডের নিচে পে-রোল অপশনে ক্লিক করুন। এবার ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT তে ক্লিক করুন। নিচের পেইজটি দেখতে পাবেন।
এবার অর্থবছর এ ক্লিক করে ড্রপডাউন মেনু থেকে বছর সিলেক্ট করুন। পেমেন্ট চক্র এ ক্লিক করে ওই একইভাবে উপবৃত্তি প্রদানের নির্দিষ্ট সময় সিলেক্ট করুন। এবার এসপিবিএমইউ স্টাটাস নির্বাচন করুন-এ ক্লিক করে IBAS RETURNED সিলেক্ট করুন। এবার ডান পাশে থাকা খুঁজুন বাটনে ক্লিক করুন।
এবার যদি আপনার স্কুলের কোন শিক্ষার্থীর তথ্য ভুলের কারণে টাকা না পেয়ে থাকে তাহলে তাদের লিস্ট দেখতে পাবেন এবং ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT ঠিক করতে পারবেন। এখন সুবিধাভোগীর নামের সোজা ডান দিকে একটি কলম (✏️) আইকন দেখতে পাবেন। এটি মূলত এডিট অ্যাকশন বাটন। এবার অ্যাকশন বাটনে ক্লিক করলে একটি পেইজে ঐ শিক্ষার্থীর সমস্ত তথ্য আপনার সামনে দেখাবে। এই পেইজ থেকে আপনি তার সকল তথ্য ভেরিফাই করে অর্থাৎ সংযোজন-বিয়োজন তথা এডিট করে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করুন।
এভাবে আপনার প্রতিষ্ঠানের যতগুলো শিক্ষার্থীর তথ্য ভুল আছে সেগুলো সব সঠিক করে সংরক্ষন করুন। আশাকরি পরবর্তী সময়ে উক্ত শিক্ষার্থী কোনরুপ ঝামেলা ছাড়াই তার উপবৃত্তির টাকা পেয়ে যাবে।
প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক কিছু প্রশ্নের উত্তর সমূহ
প্রশ্ন ১ঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
উত্তর- ১৯৮১ সালে
প্রশ্ন ২ঃ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকের নিয়োগকর্তা কে?
উত্তর- প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
প্রশ্ন ৩ঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ কত সালে সৃষ্টি হয়?
উত্তর- ১৯৯২ সালে
প্রশ্ন ৪ঃ PMED এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর- Primary and Mass Education Division.
প্রশ্ন ৫ঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর প্রধানের পদবি কী?
উত্তর- মহাপরিচালক
প্রশ্ন ৬ঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর নাম কী?
উত্তর- মো. জাকির হোসেন
প্রশ্ন ৭ঃ জতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নাম কী?
উত্তর- ড. মো. হারুন অর রশিদ
প্রশ্ন ৮ঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কর্মকর্তার পদবি কী?
উত্তর- মহাপরিচালক
প্রশ্ন ৯ঃ শিক্ষার জন্য অর্থ কর্মসূচির আওতায় একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক মাসে কত টাকা পান?
উত্তর- ১০০ টাকা
প্রশ্ন ১০ঃ প্রাথমিক শিক্ষার উপবৃত্তি প্রকল্প এর অধীনে শতকরা কত ভাগ ছাত্র/ছাত্রীকে উপবৃত্তি দেয়া হয়?
উত্তর- প্রায় শতভাগ
প্রশ্ন ১১ঃ বাংলাদেশে কখন থেকে খাদ্যের বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়?
উত্তর- ১৯৯৩ সালে
প্রশ্ন ১২ঃ উপবৃত্তি ছাত্রী হিসেবে অধ্যয়নের জন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক?
উত্তর- ৭৫% উপস্থিতি থাকতে হবে
প্রশ্ন ১৩ঃ জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ২০০০ সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষাকে সম্পূর্ণকরণের হার শতকরা কত ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে?
উত্তর- ৬০%
প্রশ্ন ১৪ঃ বাংলাদেশের ১৯৯৬-৯৭ সালের বাজেটে শিক্ষাখাতে কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে?
উত্তর- ৮৫,৭৬২ কোটি টাকা
প্রশ্ন ১৫ঃ শিক্ষার জন্য খাদ্য কর্মসূচির আওতায় গম সাহায্য পেতে শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে স্কুল কর্মদিবসের শতকরা কত দিন উপস্থিত থাকতে হবে?
উত্তর- ৭৫দিন
প্রশ্ন ১৬ঃ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক পদের শতকরা কত ভাগ মহিলাদেরকে নিয়োগ করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে?
উত্তর- ৬০%
প্রশ্ন ১৭ঃ শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য বলতে কোনটি বোঝায়?
উত্তর- শিশুদেরকে স্কুলে পাঠানোর জন্য অসচ্ছল অভিভাবকদেরকে খাদ্যশস্য প্রদান
প্রশ্ন ১৮ঃ শিক্ষার জন্য খাদ্য কর্মসূচির আওতায় একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক মাসে কতটুকু গম পান?
উত্তর- ১৫ কেজি
প্রশ্ন ১৯ঃ বাংলাদেশে কত সালের মধ্যে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে?
উত্তর- ২০৩০ সাল
শেষ কথাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি পোর্টালে কাজ করার সময় যেহেতু অনেক স্টুডেন্টের তথ্য নিয়ে কাজ করতে হয় সেহেতু টুকি-টাকি কিছু ভুল-ভ্রান্তি হওয়াটাই স্বাভাবিক। iBAS কর্তৃপক্ষ ব্লকড অ্যান্ড বাউন্স EFT অপশনটিতে যে সুবিধা প্রদান করেছেন তা আসলেই প্রশংসনীয়। সুতরাং প্রত্যেক প্রধান শিক্ষকের উচিত সঠিক নিয়মে লগইন করে তথ্য ভুল থাকলে তা সংশোধন করা। আশাকরি আজকের ব্লগ পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।