প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন আবেদন করার জন্য সরকারী অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করতে হয়। আবেদন করার সময় কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে। আবেদন গৃহীত হলে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বছরে গড়ে ৯,০০০ টাকার মত পাবেন। প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে দেওয়া হয়।
Table of Contents
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রথমে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটের লিংক প্রতিবন্ধিতা ফর্ম এর মাধ্যমে খুব সহজে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে আবেদন করা যাবে।
এখানে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তথ্য দিতে হবে। প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার জন্য সকল তথ্য সঠিক ভাবে সাবমিট করা হয়ে গেলে সংরক্ষন বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করে দিন। মনে রাখতে হবে যে, সাবমিট করার আগে অবশ্যই আবেদন ফরমটি ভালো ভাবে চেক করে নিবেন। কেননা, একবার সাবমিট করা হয়ে গেলে সেটা আর Edit করার সুযোগ থাকবে না।
আবেদন করা হয়ে গেলে Print অপশন আসবে, সেখানে ক্লিক করে প্রিন্ট করে নিন। অথবা PDF ডাউনলোড করে রাখুন। এটিকে এবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার কাউন্সিলরের কাছ থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে এনে সমাজসেবা দফতরে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহকারে জমা দিতে হবে।
আবেদনের সময় আপনাকে নিম্নলিখিত তথ্য দিতে হবেঃ
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয় পত্র (সুবর্ণ নাগরিক কার্ড)
- ব্যক্তিগত এবং যোগাযোগের তথ্য (ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি)
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার পর ফর্মটি প্রিন্ট করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার চেয়ারম্যানের সুপারিশসহ সমাজসেবা অফিসে জমা দিতে হবে। আবেদন যাচাইয়ের পর আবেদন গৃহীত হলে আপনার মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ/নগদ) এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা প্রদান করা হবে।
প্রতিবন্ধী ভাতা কবে দিবে
প্রতিবন্ধী ভাতা সাধারণত বছরে দুইবার প্রদান করা হয়। যাদের আবেদন সফলভাবে গৃহীত হয়, তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে থাকেন। সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা সরাসরি পৌছানোর জন্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করেছে, যা একদম ঝামেলা মুক্ত।
প্রতিবন্ধী ভাতা তালিকা কিভাবে করা হয়
প্রতিবন্ধী ভাতা তালিকা তৈরি করা হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নিবন্ধিত সুবর্ণ নাগরিক কার্ড যাচাই করা হয়। এরপর আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থার পর্যালোচনা করা হয় এবং দরিদ্র প্রতিবন্ধীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরই তাদেরকে ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা দেয়
বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমাণ প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বছরে মোট ৯,০০০ টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন। ভাতার পরিমাণ সময়ে সময়ে সরকারের বিভিন্ন নীতিমালার ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে।
প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড চেক
প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড বা সুবর্ণ নাগরিক কার্ড একটি বিশেষ পরিচয়পত্র যা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা হয়। এই কার্ড ব্যবহার করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সরকারি সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। কার্ড যাচাই করার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করতে হবে।
কিভাবে প্রতিবন্ধী নিবন্ধন ও সুবর্ণ নাগরিক কার্ড সংগ্রহ করতে হয়
প্রতিবন্ধী নিবন্ধন এবং সুবর্ণ নাগরিক কার্ড পাওয়ার জন্য স্থানীয় সমাজসেবা কার্যালয়ে যেতে হবে। সেখানে আবেদনকারীর প্রতিবন্ধীতার তথ্য এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হয়। এর পরে আবেদনকারীর নাম নিবন্ধিত হয়ে গেলে, তাকে সুবর্ণ নাগরিক কার্ড সরবরাহ করা হয়। এই কার্ডটিই পরবর্তীতে অনলাইনে ভাতা আবেদনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদনের শর্তাবলী
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার পূর্বে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবেঃ
- আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
- আবেদনকারীর বা তার পরিবারের বার্ষিক আয় ৩৬,০০০ টাকার নিচে হতে হবে।
- আবেদনকারীকে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত হতে হবে।
- সরকারি কর্মচারী অথবা অন্য কোন সরকারি অনুদান প্রাপ্ত ব্যক্তিরা এই ভাতা পাবেন না।
আবেদনকারী এই শর্তগুলি পূরণ করলে তিনি অনলাইনে ভাতা আবেদন করতে পারবেন। এভাবে আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পরই ভাতা প্রদান করা হবে।