জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায় – Japan Work Permit Visa

জাপান-ওয়ার্ক-পারমিট-ভিসা-পাওয়ার-উপায়-Japan-Work-Permit-Visa-cybersheba.com
জাপান একটি একক এন্ট্রির ভিসার খরচ হল JPY 3,000, এবং একাধিক এন্ট্রির ভিসার খরচ হল JPY 6,000

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হবে। জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ব্যবসা ও ক্যারিয়ার গড়ার জন্য একটি চমৎকার স্থান।

জাপানের উন্নত জীবনের মান, উচ্চ আয়ের সুযোগ এবং স্থায়ী বসবাসের ভিসার সুবিধার কারণে অনেকেই জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে আগ্রহী। তবে, জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে। এই পোষ্টে আমরা জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়, যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, এবং আরও অনেক কিছুর বিস্তারিত আলোচনা করব।

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কেন প্রয়োজন?

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আপনাকে জাপানে বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি দেয়। এটি আপনাকে জাপানে ব্যবসার সুযোগ প্রদান করে এবং আপনাকে নতুন চাকুরী ও কাজ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, জাপান তার কর্মীদের সামাজিক বীমা, আবাসন সুবিধা এবং পরিবহন ভাতা প্রদান করে।

  • উচ্চ আয়ের সুযোগঃ জাপানে কাজ করে উচ্চ আয় উপার্জন করা সম্ভব। জাপান তার কর্মীদের সামাজিক বীমা, আবাসন সুবিধা এবং পরিবহন ভাতা প্রদান করে।
  • স্থায়ী বসবাসের সুবিধাঃ জাপানের কাজের ভিসা পেয়ে আপনি স্থায়ীভাবে জাপানে থাকতে পারবেন। জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আপনাকে ভবিষ্যতে স্থায়ী বসবাসের ভিসা পেতে সাহায্য করবে।
  • নতুন চাকুরীঃ জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নতুন চাকুরী ও ব্যবসা করার সুযোগ এনে দেবে।

জাপানে কাজের ভিসার প্রকারভেদ

Japan-visa-place-জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায় - Japan Work Permit Visa-cybersheba.com

জাপানে কাজের ভিসার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। প্রতিটি ভিসা নির্দিষ্ট কাজ বা পেশার জন্য নির্ধারিত। কিছু জনপ্রিয় কাজের ভিসার প্রকারভেদ হলোঃ

  • পেশাগত ভিসাঃ এটি প্রকৌশলী, আইটি পেশাদার, ব্যাঙ্কার, সাংবাদিক, অধ্যাপক, এবং অন্যান্য পেশার জন্য নির্ধারিত।
  • শিল্পী ভিসাঃ এই ভিসা শিল্পী এবং সৃষ্টিশীল পেশার লোকদের জন্য।
  • প্রশিক্ষক ভিসাঃ এটি ইংরেজি শিক্ষক এবং অন্যান্য প্রশিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত।
  • সাংবাদিক ভিসাঃ সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত ভিসা।
  • দক্ষ শ্রমিক ভিসাঃ এটি দক্ষ শ্রমিকদের জন্য।

নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মী ভিসা (SSV1 এবং SSV2)

নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মী ভিসা শ্রম সেক্টরে কাজ করতে ইচ্ছুক কর্মীদের জন্য নির্ধারিত ভিসা। জাপান ভিসা পলিসি অনুসারে এটি দুই প্রকারে বিভক্তঃ

  • নির্দিষ্ট দক্ষতা ভিসা 1-SSV1: এই ভিসা জাহাজ নির্মাণ, কৃষি, এবং নার্সিং কেয়ারের মতো নির্দিষ্ট শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য। এই ভিসার জন্য জাপানি ভাষা পরীক্ষা এবং কিছু প্রযুক্তিগত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। বৈধতা ১ বছরের জন্য এবং প্রতি ৫ বছরের জন্য রিনিউ করা যেতে পারে।
  • নির্দিষ্ট দক্ষতা ভিসা 2-SSV2: যারা নির্দিষ্ট স্কিলস ভিসা 1-SSV1 নিয়ে কাজ করছেন এবং চাকরির উচ্চ পদে চলে গেছেন তারা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই ভিসা নবায়ন করার মাধ্যমে কর্মীরা তাদের পরিবার জাপানে নিয়ে যেতে পারে।

জাপানের কাজের ভিসার জন্য যোগ্যতা

জাপানের কাজের ভিসার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। এগুলো হলোঃ

  • বয়সঃ আপনার বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য ন্যূনতম এসএসসি পাস হতে হবে। স্টুডেন্ট ভিসার জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
  • ভাষা দক্ষতাঃ জাপানি ভাষায় দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে।
  • স্বাস্থ্যঃ জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্সঃ নিরাপত্তা পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

জাপানের কাজের ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

জাপানের কাজের ভিসার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র প্রয়োজন হয়, এগুলো হলোঃ

  • যোগ্যতার প্রশংসাপত্র (COE)ঃ আপনার শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতার প্রমাণ।
  • ভিসা আবেদন ফর্মঃ যা সঠিক তথ্য দিয়ে সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে হবে।
  • সাম্প্রতিক ফটোগ্রাফঃ ৪ সেমি × ৩ সেমি মাপের।
  • পাসপোর্টের অনুলিপিঃ মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ সহ।
  • চাকরির অফারঃ জাপানের কোন কোম্পানী থেকে চাকরীর অফার লেটার।
  • ফিরতি মেল খামঃ একটি JPY 392 স্ট্যাম্প সহ।
  • সিভি এবং ডিগ্রি সার্টিফিকেটঃ মূল ডিগ্রি সার্টিফিকেটের অনুলিপি।

কিভাবে জাপানে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন

জাপানের ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া কিছু ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। প্রথমে, আপনার প্রয়োজন ভিসার ধরন নির্বাচন করুন এবং যোগ্যতা পরীক্ষা করুন। এরপর অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ করুন, আপনার আঙ্গুলের ছাপ এবং ছবি দিন, ফি পরিশোধ করুন, এবং আপনার গন্তব্য দেশের দূতাবাসে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করুন।

সব প্রয়োজনীয় নথি সহ ফর্ম জমা দিন এবং ইন্টারভিউতে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। এই সব কিছু করার পর উত্তীর্ণ হলে আপনি জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন।

বিএমইটির মাধ্যমে বিনা খরচে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণ কর্মসূচি

বিএমইটির তত্ত্বাবধানে সরকারিভাবে বিনা খরচে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। IM Japan (International Manpower Development Organization) -এর সহায়তায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়। তবে, এই প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট শর্তাবলী ও নিয়ম মেনে আবেদন করতে হয়।

সরকারিভাবে জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে প্রয়োজনীয় শর্তসমূহঃ

  • জাপানি ভাষায় দক্ষতা (কমপক্ষে N5 লেভেল)
  • বয়সসীমা: ১৮ থেকে ৩০ বছর
  • ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি পাস
  • উচ্চতা: ছেলেদের জন্য ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, মেয়েদের জন্য ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি
  • পূর্বে জাপানে কর্মরত ছিলেন না

আবেদন প্রক্রিয়াঃ

  • IM Japan কর্মী প্রয়োজন হলে বিএমইটির মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়
  • শর্ত পূরণকারী আগ্রহী প্রার্থীরা টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে আবেদন করতে পারেন।
  • ৫ বছরের জন্য জাপানে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।

আবেদনের ধাপ:

  • BMET-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করুন।
  • নির্ভুলভাবে পূরণ করে বিএমইটির নির্ধারিত ইমেইলে পাঠান।
  • আবেদন যাচাই শেষে যোগ্য প্রার্থীদের মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে প্রাথমিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে
  • নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ TTC কার্যালয়ে উপস্থিত হতে হবে

এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ সরকারি ও বিনামূল্যে পরিচালিত হয়, তাই আগ্রহী প্রার্থীরা নির্দিষ্ট শর্ত মেনে আবেদন করতে পারেন

জাপানের কাজের ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময়

জাপানের কাজের ভিসার প্রক্রিয়াকরণের সময় সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিন লাগে। কখনও কখনও, আপনার আবেদন বা আবেদনকারীর সংখ্যার সাথে কিছু সমস্যা থাকলে এটি তার থেকেও বেশি সময় নিতে পারে।

জাপানের কাজের ভিসার খরচ

কাজের ভিসার খরচ আপনার পছন্দের ভিসার ধরন এবং আপনার জাতীয়তার উপর নির্ভর করে। একটি একক এন্ট্রির ভিসার খরচ হল JPY 3,000, এবং একাধিক এন্ট্রির ভিসার খরচ হল JPY 6,000। যা বাংলাদেশ টাকা ২,৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

শেষ কথা

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া একটি জটিল প্রক্রিয়া হতে পারে, কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি এবং নির্দেশনা অনুসরণ করে এটি সম্পন্ন করা সম্ভব। জাপানে কাজের ভিসা পেয়ে আপনি উন্নত জীবন উপভোগ করতে পারবেন এবং আপনার ক্যারিয়ারকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবেন।

আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাকে জাপানে কাজের ভিসার প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছে।

Picture of Ali Hayder

Ali Hayder

আমি আলী হায়দার, সাইবার সেবা'র একজন নিমিত ব্লগার। অনলাইন আর্নিং, আইটি প্রফেশন, কম্পিউটার, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি বিষয়ের উপর আমার ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। এই ওয়েবসাইটে ই-সার্ভিস নিয়ে নিয়মিত লেখা-লেখি করছি।

ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/alihayder2050/

6 Responses

  1. MD. SALIM
    Father:- FUZLUL KARIM
    MST CHATARA BEGUM
    Address- RAM NARAYANPUR.WARD NO-06.CHATKHIL.KALYAN.NAGAR-3870.NOAKHALI
    CONTACT- MANJUMA AKHTER
    Relationship Address- TNT COLONY AGRABAD.
    DOUBLE MOORING.CHITTAGONG.
    BANGLADESH
    POST OFFICE-4100
    CHATTOGRA

  2. MD. SALIM
    Father- FUZLUL KARIM
    MST- CHATARA BEGUM
    Address- RAM NARAYANPUR.
    WARD NO-06.CHATKHIL.KALYAN.NAGAR-3870.NOAKHALI
    CONTACT- MANJUMA AKHTER
    Relationship Address- TNT COLONY AGRABAD.DOUBLE MOORING.CHITTAGONG. Bangladesh
    POST OFFICE-4100
    CHATTOGRA

  3. আমার মতোবো হলো আমার বয়েস ৪০ মতো আমার ভিসা চাই ভালো বেতনে
    গাড়ি চালাতে পারি ও ওয়েল ডিন কাজ মোটামোটি বুঝি +880133146ম7456 জানা বেন জলদি 8 পাসআমি

    1. জনাব শফিউল আলম ভাই, আমরা ভিসা প্রদান করিনা বা ভিসা সম্পর্কিত ব্যবসার সাথে জড়িত না। অনুগ্রহপূর্বক কোন বিশ্বস্ত ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করুন। তাছাড়া সরকারি ভাবে কিভাবে বিদেশ যাওয়া যায় – সেটার উপর আমাদের কিছু পোষ্ট আছে। সেগুলো পড়ে দেখতে পারেন। – ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *