বর্তমানে বিশ্বের যে দেশগুলো ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা হচ্ছে

বর্তমানে বিশ্বের যে দেশগুলো ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা হচ্ছে-cybersheba.com
এখনকার দিনে ইউরোপে অনেক দেশ ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা বা কাজের ভিসার মাধ্যমে বিদেশী কর্মীদের সুযোগ প্রদান করছে।

বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করছে। বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতির চাহিদা অনুযায়ী বিদেশি কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করে থাকে। উন্নত দেশগুলোর শিল্পখাত, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও নির্মাণ খাতে দক্ষ এবং অদক্ষ কর্মীদের চাহিদা বাড়ছে, ফলে তারা বিদেশি কর্মীদের আকৃষ্ট করছে।

ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন দেশ প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ কাজের ভিসা প্রদান করে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলছে। বিশেষত, জার্মানি, পোল্যান্ড, স্পেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইতালি, সুইডেন এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর কাজের ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ এবং তারা দক্ষ জনবল নিতে বেশি আগ্রহী।

ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা দিচ্ছে এমন দেশ

ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা দিচ্ছে বর্তমানে এমন দেশের সংখ্যা কম নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বিদেশী কর্মীকে আকর্ষণ করতে ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা প্রক্রিয়া চালু করেছে। ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত দেশের বিশেষ প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে দেয়। এখানে কিছু দেশের নামের তালিকা দেওয়া হলো যেখানে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা পাওয়া সম্ভব।

দেশের নামকাজের ভিসার চাহিদাপদের ধরনভিসা প্রক্রিয়াপ্রধান খাতভিসা অনুমোদনের হার
পোল্যান্ডউচ্চকৃষি, নির্মাণ, উৎপাদনসরকারি অনুমোদন এবং আবেদনের প্রক্রিয়া, ত্রৈমাসিক অনুমোদনকৃষি, নির্মাণ, উৎপাদনপ্রায় ৫০-৬০%
স্পেনমধ্যমকৃষি, হোটেল, আতিথেয়তাপ্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষ থেকে আবেদন এবং যাচাই প্রক্রিয়াকৃষি, হোটেল, আতিথেয়তাপ্রায় ৫৫-৬৫%
জার্মানিউচ্চআইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্যসেবাশিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা যাচাই এবং কভার লেটার সহ আবেদন প্রক্রিয়াআইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্যসেবাপ্রায় ৬৫-৭০%
ইতালিমধ্যমকৃষি, ব্যবসা, নির্মাণকাজের ভিসা আবেদন, বিশেষ দক্ষতা যাচাইকৃষি, নির্মাণ, ব্যবসাপ্রায় ৪৫-৫৫%
নেদারল্যান্ডসউচ্চআইটি, প্রকৌশল, গণনাবিস্তারিত আবেদন প্রক্রিয়া, শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাইআইটি, প্রকৌশল, গণনাপ্রায় ৫৫-৬৫%
সুইডেনমধ্যমআইটি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশলভিসা আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা যাচাইআইটি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশলপ্রায় ৬০-৭০%
নরওয়েউচ্চআইটি, প্রকৌশল, স্বাস্থ্যসেবাকাজের ভিসা আবেদন, বিশেষ দক্ষতা যাচাইআইটি, প্রকৌশল, স্বাস্থ্যসেবাপ্রায় ৬৫-৭৫%
যুক্তরাজ্যমধ্যম থেকে উচ্চআইটি, স্বাস্থ্য, ইঞ্জিনিয়ারিংব্রেক্সিটের পর ভিসা নীতির পরিবর্তন, দক্ষতার ভিত্তিতে আবেদনআইটি, স্বাস্থ্য, ইঞ্জিনিয়ারিংপ্রায় ৬০-৭০%
ফ্রান্সমধ্যমকৃষি, নির্মাণ, ব্যবসাভিসা আবেদন প্রক্রিয়া, বিশেষ দক্ষতার যাচাইকৃষি, নির্মাণ, ব্যবসাপ্রায় ৫০-৬০%

এখনকার দিনে ইউরোপে অনেক দেশ ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা বা কাজের ভিসার মাধ্যমে বিদেশী কর্মীদের সুযোগ প্রদান করছে। দেশগুলোর ভিসা অনুমোদনের হার এবং চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন, তবে দক্ষ কর্মীদের জন্য অনেক দেশে কাজের সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগগুলো দেশের অর্থনীতির চাহিদা এবং বিশেষ খাতের উপর নির্ভর করে।

পোল্যান্ডে কাজের ভিসা

পোল্যান্ড ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ যেখানে বিদেশি কর্মীরা সহজেই ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা বা কাজের সুযোগ পেতে পারেন। এই দেশটি মূলত উৎপাদন, নির্মাণ, কৃষি এবং পরিষেবা খাতে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের নিয়োগ করে।

পোল্যান্ডের কাজের ভিসার ধরন

পোল্যান্ডে বিভিন্ন ধরণের ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করা হয়, যেমনঃ

  • টাইপ A- যদি কোনও বিদেশি নাগরিক পোল্যান্ডের কোম্পানির মাধ্যমে চাকরি পায় তাহলে তাকে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করা হয়।
  • টাইপ B- যদি বিদেশি ব্যক্তি কোম্পানির বোর্ড মেম্বার হিসেবে কাজ করে এবং ৬ মাসের বেশি থাকে তাহলে তাকে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করা হয়।
  • টাইপ C- যদি কোনো বিদেশি কর্মী অন্য দেশে কাজ করে কিন্তু পোল্যান্ডে ট্রান্সফার করা হয় তাহলে তাকে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করা হয়।
  • টাইপ D- নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য সীমিত সময়ের জন্য কাজের অনুমতি।
  • টাইপ E- অন্যান্য বিশেষ কাজের অনুমতির জন্য প্রযোজ্য হলে তাকে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করা হয়।

আবেদন প্রক্রিয়া

পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবেঃ

  • একটি পোলিশ কোম্পানি থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • নিয়োগকর্তা পোল্যান্ডের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে ওয়ার্ক পারমিটের অনুমতি নিবে।
  • ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদিত হলে, আবেদনকারীকে পোল্যান্ডের দূতাবাসে ( Ministry of Foreign Affairs Republic of Poland ) ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
  • ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, আবেদনকারী পোল্যান্ডে গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবে।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

পোল্যান্ডে চাকরির ধরন অনুযায়ী বেতন ভিন্ন হতে পারে। গড় বেতনঃ

  • নির্মাণ শ্রমিক- প্রতি মাসে- ২,৫০০ – ৪,০০০ PLN।
  • ফ্যাক্টরি কর্মী- প্রতি মাসে- ৩,০০০ – ৪,৫০০ PLN।
  • IT ও ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর- ৬,০০০ – ১০,০০০ PLN।

অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছেঃ

  • স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা।
  • বছরে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছুটি।
  • স্থায়ী বসবাসের সুযোগ।

পোল্যান্ডে তাহলে তাকে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ এবং এটি ইউরোপে প্রবেশের অন্যতম ভালো উপায়। আপনি যদি যোগ্য হন এবং সঠিকভাবে আবেদন করেন, তবে পোল্যান্ডে কাজের দারুণ সুযোগ পেতে পারেন।

স্পেনের কাজের ভিসা

Work-Visa-বর্তমানে বিশ্বের যে দেশগুলো ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা হচ্ছে-cybersheba.com

স্পেন ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ যেখানে বিদেশি কর্মীদের জন্য বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। দেশটি কৃষি, পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের নিয়োগ করে।

স্পেনের কাজের ভিসার ধরন

স্পেনে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রধানত নিম্নলিখিত ধরণের হয়ে থাকেঃ

  • শ্রমিক ভিসা (Work Visa)- নির্দিষ্ট কোম্পানির অধীনে চাকরির জন্য অনুমোদিত ভিসা।
  • সিজনাল ওয়ার্ক ভিসা- কৃষি ও পর্যটন খাতে স্বল্পমেয়াদী কাজের জন্য অনুমোদিত।
  • ইন্ট্রা-কম্পানি ট্রান্সফার ভিসা- যদি কোনো কর্মী একই কোম্পানির অন্য শাখায় ট্রান্সফার হন।
  • স্বনিয়োজিত (Self-Employed) ভিসা- যারা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান।

আবেদন প্রক্রিয়া

স্পেনের ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহঃ

  • একটি স্প্যানিশ কোম্পানির কাছ থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • নিয়োগকর্তা স্পেনের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে ওয়ার্ক পারমিটের অনুমতি নেবে।
  • ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদিত হলে, আবেদনকারীকে স্পেনের দূতাবাসে ( REPUBLIC OF SPAIN ) ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
  • ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, আবেদনকারী স্পেনে গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবে।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

স্পেনে কাজের সুযোগের পাশাপাশি কর্মীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় বেতন ও সুবিধাঃ

  • গড় মাসিক বেতন- ১,৫০০ – ৩,৫০০ ইউরো (পেশাভেদে পরিবর্তনশীল)।
  • ফ্রি হেলথ ইন্স্যুরেন্স সুবিধা।
  • বার্ষিক বোনাস ও অতিরিক্ত ওভারটাইম সুবিধা।
  • পারিবারিক স্পন্সরশিপের সুযোগ (নির্দিষ্ট সময় পর)।

স্পেনে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ এবং যারা ইউরোপে কাজ করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার সুযোগ। দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের জন্য বিভিন্ন খাতে প্রচুর চাকরির সুযোগ রয়েছে। তবে, আবেদন করার আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও শর্তাবলী ভালোভাবে জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

জার্মানির কাজের ভিসা

জার্মানি ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ যেখানে দক্ষ কর্মীদের জন্য প্রচুর চাকরির সুযোগ রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি, প্রকৌশল, স্বাস্থ্যসেবা, এবং নির্মাণ খাতে বিদেশি কর্মীদের জন্য ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

জার্মানির কাজের ভিসার ধরন

জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকেঃ

  • সাধারণ ওয়ার্ক ভিসা- জার্মান কোম্পানির মাধ্যমে চাকরির জন্য অনুমোদিত ভিসা।
  • ইইউ ব্লু কার্ড- উচ্চ বেতনের চাকরির জন্য বিশেষ ভিসা যা নাগরিকত্বের পথ সুগম করে।
  • সিজনাল ওয়ার্ক ভিসা- কৃষি ও পর্যটন খাতে স্বল্পমেয়াদী চাকরির জন্য অনুমোদিত।
  • স্বনিয়োজিত (Self-Employed) ভিসা- যারা জার্মানিতে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান।

আবেদন প্রক্রিয়া

জার্মানির ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহঃ

  • একটি জার্মান কোম্পানির কাছ থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • কাজের চুক্তি স্বাক্ষর করার পর, নিয়োগকর্তা জার্মান শ্রম মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে।
  • অনুমোদন পাওয়ার পর, আবেদনকারী নিজ দেশে অবস্থিত জার্মান দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
  • ভিসা অনুমোদিত হলে, আবেদনকারী জার্মানিতে গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

জার্মানিতে চাকরির পাশাপাশি কর্মীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় বেতন ও সুবিধাঃ

  • গড় মাসিক বেতন- ২,০০০ – ৫,০০০ ইউরো (চাকরির ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে)।
  • স্বাস্থ্য বীমা ও সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা।
  • কর্মসংস্থানের স্থায়িত্ব ও ভবিষ্যতে নাগরিকত্বের সুযোগ।

জার্মানি দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। যারা ইউরোপে কাজ করতে চান এবং ভবিষ্যতে স্থায়ী হতে চান, তাদের জন্য জার্মানির ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা একটি চমৎকার সুযোগ। সঠিক প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকলে সহজেই এই ভিসা পাওয়া সম্ভব।

ইতালিতে কাজের ভিসা

ইতালি ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ যেখানে বিদেশি কর্মীদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। কৃষি, নির্মাণ, পর্যটন এবং আতিথেয়তা শিল্পে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা বেশি।

ইতালির কাজের ভিসার ধরন

ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকেঃ

  • সাধারণ ওয়ার্ক পারমিট- নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার মাধ্যমে চাকরির জন্য অনুমোদিত ভিসা।
  • সিজনাল ওয়ার্ক ভিসা- কৃষি ও পর্যটন খাতে স্বল্পমেয়াদী চাকরির জন্য অনুমোদিত।
  • স্বনিয়োজিত (Self-Employed) ভিসা- যারা ইতালিতে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান।
  • ইনট্রা-কম্পানি ট্রান্সফার ভিসা- আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ কর্মসংস্থানের অনুমতি।

আবেদন প্রক্রিয়া

ইতালির কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহঃ

  • একটি ইতালিয়ান কোম্পানির কাছ থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • কাজের চুক্তি স্বাক্ষর করার পর, নিয়োগকর্তা ইতালির ইমিগ্রেশন বিভাগে অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে।
  • অনুমোদন পাওয়ার পর, আবেদনকারী নিজ দেশে অবস্থিত ইতালির দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
  • ভিসা অনুমোদিত হলে, আবেদনকারী ইতালিতে গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

ইতালিতে চাকরির পাশাপাশি কর্মীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় বেতন ও সুবিধাঃ

  • গড় মাসিক বেতন- €১,২০০ – €২,৫০০ (খাতভেদে পরিবর্তনশীল)।
  • স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা।
  • বার্ষিক ছুটির সুবিধা।
  • পরিবারসহ থাকার অনুমতি।

ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা পেতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যারা দক্ষ ও অভিজ্ঞ, তাদের জন্য ইতালি একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে। সঠিক নথিপত্র ও যোগ্যতা থাকলে, ইতালির ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ।

যুক্তরাজ্যের (UK) কাজের ভিসা

যুক্তরাজ্য বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ যেখানে বিদেশি কর্মীদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। আইটি, স্বাস্থ্যসেবা, নির্মাণ, আতিথেয়তা এবং শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা ব্যাপক।

যুক্তরাজ্যের কাজের ভিসার ধরন

যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা রয়েছেঃ

  • Skilled Worker Visa- নির্দিষ্ট দক্ষতা সম্পন্ন কর্মীদের জন্য অনুমোদিত ভিসা।
  • Health and Care Worker Visa- চিকিৎসা ও সেবামূলক কাজে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য বিশেষ ভিসা।
  • Global Talent Visa- আইটি, বিজ্ঞান ও গবেষণায় বিশেষজ্ঞদের জন্য অনুমোদিত।
  • Seasonal Worker Visa- কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন খাতে স্বল্পমেয়াদী কর্মীদের জন্য অনুমোদিত।

আবেদন প্রক্রিয়া

যুক্তরাজ্যের ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহঃ

  • একটি UK কোম্পানির কাছ থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • কাজের চুক্তি স্বাক্ষর করার পর, নিয়োগকর্তা UK Visas and Immigration (UKVI) এর মাধ্যমে স্পন্সরশিপ সার্টিফিকেট ইস্যু করবে।
  • অনুমোদন পাওয়ার পর, আবেদনকারী নিজ দেশে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
  • ভিসা অনুমোদিত হলে, আবেদনকারী যুক্তরাজ্যে গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

যুক্তরাজ্যে চাকরির পাশাপাশি কর্মীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় বেতন ও সুবিধাঃ

  • গড় মাসিক বেতন- £২,০০০ – £৪,৫০০ (কাজের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে)।
  • চিকিৎসা সুবিধা (NHS)।
  • বার্ষিক ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।
  • পরিবার নিয়ে বসবাসের সুযোগ।

যুক্তরাজ্যের ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা পেতে হলে সঠিক যোগ্যতা অর্জন করা, চাকরির অফার সংগ্রহ করা এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা জরুরি। আপনি যদি দক্ষ কর্মী হন এবং উন্নত জীবনের সন্ধানে থাকেন, তবে যুক্তরাজ্যে কাজের সুযোগ একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার (Australia) কাজের ভিসা

অস্ট্রেলিয়া দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের জন্য অন্যতম সেরা গন্তব্য। দেশটিতে উন্নত জীবনযাত্রা, উচ্চ বেতন এবং স্থায়ী বসবাসের সুযোগ থাকায় বহু বিদেশি কাজের জন্য আবেদন করে।

অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসার ধরন

অস্ট্রেলিয়ার সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করেঃ

  • Subclass 482 (Temporary Skill Shortage Visa)- অস্থায়ী দক্ষ কর্মীদের জন্য অনুমোদিত ভিসা।
  • Subclass 186 (Employer Nomination Scheme Visa)- দীর্ঘমেয়াদী চাকরির জন্য অনুমোদিত।
  • Subclass 494 (Skilled Employer Sponsored Regional Visa)- নির্দিষ্ট অঞ্চলে কাজ করার জন্য ভিসা।
  • Working Holiday Visa (Subclass 417 & 462)- স্বল্পমেয়াদী কাজের সুযোগ।

আবেদন প্রক্রিয়া

অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহঃ

  • একজন অনুমোদিত অস্ট্রেলিয়ান নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • নিয়োগকর্তা অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন বিভাগে স্পন্সরশিপের জন্য আবেদন করবে।
  • স্পন্সরশিপ অনুমোদনের পর আবেদনকারী নিজ দেশে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবে।
  • ভিসা অনুমোদিত হলে আবেদনকারী অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

অস্ট্রেলিয়ার চাকরির বাজারে গড়ে একজন শ্রমিক বছরে ৬০,০০০ – ১২০,০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।

  • উচ্চ বেতন কাঠামো
  • স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা
  • স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
  • কর্মসংস্থান সুরক্ষা

অস্ট্রেলিয়া দক্ষ কর্মীদের জন্য নানান সুযোগ তৈরি করছে। যারা দীর্ঘমেয়াদী কাজ করতে চান, তারা প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা নিয়ে আসতে পারেন এবং পরবর্তীতে স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের (USA) কাজের ভিসা

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের জন্য আকর্ষণীয় দেশ। দেশটি উচ্চ বেতনের চাকরি, উন্নত জীবনযাত্রা, ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ প্রদান করে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাজের ভিসার ধরন

যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বিভিন্ন ধরণের ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করেঃ

  • H-1B Visa- দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য (যেমনঃ আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল ইত্যাদি)।
  • H-2B Visa- অস্থায়ী অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য।
  • H-2A Visa- কৃষি খাতে শ্রমিকদের জন্য।
  • L-1 Visa- আন্তর্জাতিক কোম্পানির কর্মীদের জন্য।
  • O-1 Visa- বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য।
  • EB-3 Visa- দক্ষ, অদক্ষ ও পেশাগত শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী ভিসা।

আবেদন প্রক্রিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহঃ

  • একজন অনুমোদিত নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার সংগ্রহ করা।
  • নিয়োগকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন বিভাগে (USCIS) স্পন্সরশিপের জন্য আবেদন করবে।
  • স্পন্সরশিপ অনুমোদনের পর আবেদনকারী নিজ দেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবে।
  • ভিসা অনুমোদিত হলে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন।

বেতন ও অন্যান্য সুবিধা

  • গড় মাসিক বেতন- $৩,০০০ – $১০,০০০ (পেশার উপর নির্ভর করে)।
  • স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা।
  • প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা।
  • গ্রিন কার্ডের (স্থায়ী বসবাস) সুযোগ।

যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার সুযোগ পেতে হলে দক্ষতা, শিক্ষা এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন বৈধ স্পন্সরের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।

শেষ কথা

ইউরোপের মধ্যে বর্তমানে জার্মানি, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, এবং যুক্তরাজ্য এমন কিছু দেশ যেখানে ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে ভিসা অনুমোদনের রেট নির্ভর করবে আপনার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং পেশাগত দক্ষতার ওপর।

কিছু দেশ যেমন জার্মানি বা নেদারল্যান্ডস বিশেষ কিছু দক্ষতার জন্য উচ্চ সম্ভাবনা প্রদান করে, তবে পোল্যান্ড বা ফিনল্যান্ড কিছুটা সহজ এবং দ্রুত অনুমোদন প্রক্রিয়া পালন করে।

আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তবে আপনার পেশার জন্য উপযুক্ত দেশ এবং সেই দেশের অভিবাসন নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। মনে রাখবেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অভিবাসন নীতিমালা এবং কাজের সুযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্নতা থাকতে পারে, তাই প্রতিটি দেশের জন্য প্রস্তুতি নেয়া জরুরি।

Picture of Ali Hayder

Ali Hayder

আমি আলী হায়দার, সাইবার সেবা'র একজন নিমিত ব্লগার। অনলাইন আর্নিং, আইটি প্রফেশন, কম্পিউটার, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি বিষয়ের উপর আমার ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। এই ওয়েবসাইটে ই-সার্ভিস নিয়ে নিয়মিত লেখা-লেখি করছি।

ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/alihayder2050/

2 Responses

  1. I am a Bangladeshi and I have gained experience in a clothing store and farm and agricultural work. Now can I go abroad with a visa for this work?

    1. Hello Mr Ashik, we have lot’s of article on “how to go aboard with visa work”. Please explore our website for more details. If you tell me your preferred country, I can tell you more specific information.

      Thank you,
      Admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *