দৈনন্দিন অফিসিয়াল অনেক কাজে আমাদের এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রয়োজনীতা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা NID একজন নাগরিকের প্রধান পরিচয়পত্র ও ব্যক্তিগত তথ্য। গত কয়েকটি পোস্টে আমরা দেখেছি কিভাবে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড না করেও তথ্য দেখতে পারি, খুব সহজে অনলাইনে মোবাইল দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করা যায় এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল তথ্য যেমনঃ নিজের নাম ও বয়স, বাবা-মায়ের নাম, জন্ম সাল, জন্ম তারিখ, ব্যক্তিগত ঠিকানা ইত্যাদি সংশোধন করা যায়। আজকে দেখব কিভাবে খুব সহজে অনলাইন থেকে আপনার এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। তাহলে দেরী না করে চলুন শুরু করি।
কেন এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করা প্রয়োজন
নিত্যদিনের বিভিন্ন কার্যকলাপে প্রায়ই এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু অনেক সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি হাতে আনতে কয়েক দিন বা মাস অপেক্ষা করা লাগতে পারে। এমন সময়ে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান যে, অফিশিয়াল কাজগুলো কিভাবে সেরে ফেলবেন। আজকের এই পোস্টটি সেই উদ্বেগ নিরসন করার লক্ষ্যে প্রকাশ করা হল। আপনি যদি এই পোস্ট অনুযায়ী আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারেন, তবে আপনি আপনার অফিশিয়াল কাজগুলো অনায়াসে মূল পরিচয়পত্র হাতে না আসা পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারবেন। তাই অবিলম্বে এবং সহজেই ডাউনলোড করে ফেলুন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি।
আরোও পড়ুনঃ ঝামেলা ছাড়াই NID কার্ডের ভুল সংশোধন করুন।
যেভাবে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন
আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের যেকোন ব্রাউজারে গিয়ে NIDBD লিখে সার্চ করুন, অথবা সরাসরি এই লিংকে ক্লিক করুন। তাহলে এরকম একটি ইন্টারফেইস দেখতে পাবেন।
এখানে রেজিস্টার করুন অপশনে ক্লিক করে আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য সাবমিট করুন। যেমনঃ
- NID বা ফর্ম নাম্বার
- জন্ম তারিখ, দিন, মাস, বছর এবং
- ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।
২য় ধাপঃ এই ধাপে আপনার NID ফর্ম অনুযায়ী বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করতে হবে। যে সকল তথ্য দিতে হবে তা হলঃ
- বিভাগ
- জেলা
- উপজেলা
- একই ভাবে স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করুন এবং পরিবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
৩য় ধাপঃ এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে এই ধাপে আপনাকে ফোন নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনার সামনে ফোন নাম্বার দেখাবে। যদি ফোন নাম্বারটি ঠিক থাকে তাহলে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করুন। আর যদি নাম্বারটি ভুল থাকে তাহলে মোবাইল পরিবর্তন বাটনে ক্লিক করে নাম্বার পরিবর্তন করে নিন।
বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করার পর আপনার দেওয়া প্রদত্ত নাম্বারে ৬ বা ৮ ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে। কোডটি বসিয়ে বহাল বাটনে ক্লিক করুন।
সব ঠিক-ঠাক থাকলে আপনার সামনে Tap to open NID wallet একটা অপশন দেখতে পাবেন। সেটাতে ক্লিক করলে আপনাকে গুগল প্লেস্টোরে নিয়ে যাবে। প্লেস্টোর থেকে NID wallet অ্যাপটি ইন্সটল করে ওপেন করুন।
৪র্থ ধাপঃ এনআইডি কার্ড ডাউনলোড এর এই ধাপে NID Wallet অ্যাপটি ওপেন করার পর START FACE SCAN অপশনে ক্লিক করুন। তাপর ৩টি ধাপে আপনার মাথা নাড়া-চাড়া করুন। কখন কোন দিকে মাথা নাড়াতে সেটা স্ক্রিনে লেখা উঠবে, সেটা অবশ্যই খেয়াল করবেন। যেমন-
- সোজা বরাবর
- ডান দিকে ফিরান
- বাম দিকে ফিরান
যদি আপনার দেওয়া ইনফরমেশনের সাথে আপনার ছবি ম্যাচ করে তাহলে আপনার সামনে আপনার NID ছবি সহ সকল তথ্য দেখাবে। এখন একটু নিচের দিকে গেলে NID Download অপশন দেখতে পাবেন। উক্ত NID Download বাটনে ক্লিক করলে আপনার এনআইডি কার্ড ডাউনলোড হয়ে যাবে। এখন আপনি এটি প্রিন্ট দিয়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। যতদিন পর্যন্ত না আপনি অরিজিনাল কপি হাতে পাচ্ছেন।
এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রয়োজনীয়তা
বর্তমান সমাজে, পরিচিতি সম্পর্কিত দলিল যেমন এনআইডি কার্ড অত্যন্ত জরুরি। তাই এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার গুরুত্ব আমাদের বোঝা দরকার। একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে, এনআইডি কার্ড আপনার পরিচয়ের প্রমাণ এবং বৈধ নাগরিকত্বের চিহ্ন। এই কার্ডটি বিভিন্ন সেবার জন্য আবশ্যক—ব্যাংকিং থেকে চাকরির আবেদন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন থেকে মোবাইল সিম ক্রয়–সবক্ষেত্রেই এনআইডি কার্ডের প্রয়োজন পড়ে।
গতানুগতিক প্রণালীতে, এনআইডি কার্ড প্রাপ্তির জন্য অনেক সময় ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। অনলাইনে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার ব্যবস্থা নাগরিকদের জন্য এই সমস্যার সমাধান এনেছে। এখন অনলাইন পোর্টালে গিয়ে সহজেই নিজের এনআইডি কার্ডের একটি প্রিন্টেবল কপি ডাউনলোড করা সম্ভব, যা বিভিন্ন জরুরি সেবা ও প্রার্থনা পত্রে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
এনআইডি অনলাইন সেবা নিম্নলিখিত সুবিধা প্রদান করেঃ
সুবিধাঃ ঘরে বসেই আপনি আপনার এনআইডি কার্ডের কপি ডাউনলোড করতে পারেন, যা অনেক সময়সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক।
ঝামেলাবিহীনঃ দীর্ঘ লাইন, অফিসের চক্কর, প্রতীক্ষার ঘণ্টা—এই সব ঝামেলা এড়িয়ে চলা যায় অনলাইনে এনআইডি কার্ড ডাউনলোডে।
সবসময় প্রাপ্যতাঃ নিজের এনআইডি কার্ডের ডিজিটাল কপি ডাউনলোডের মাধ্যমে, আপনি যেকোনো সময় তা পেতে পারেন এবং প্রয়োজনে অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
হারিয়ে গেলেঃ এনআইডি কার্ড হারিয়ে গেলে, ডাউনলোড করা কপিকে তাৎক্ষণিক বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়, যখন আপনি মূল কার্ডটি ফেরত পাওয়া বা নতুন করে অনুকূল করার প্রক্রিয়ায় আছেন।
নিরাপত্তা ও গোপনীয়তাঃ অনলাইন পোর্টালগুলো সাধারণত শক্তিশালী নিরাপত্তা প্রযুক্তি দিয়ে রক্ষিত থাকে, তাই আপনার তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রক্রিয়াটি একজন নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার প্রদর্শন করে।
আশাকরি পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে, ধন্যবাদ।