ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে। ইউরোপ ভ্রমণ একটি আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে, যা ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং আধুনিকতার এক অপূর্ব মিশ্রণ। এটি বিশ্বব্যাপী ভ্রমণকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং সৌন্দর্যের কারণে বেশিরভাগ পর্যটকরা এখানে আসতে চান। তবে, ইউরোপে ভ্রমণের খরচ কিছুটা বেশি এবং এজন্য আপনি যদি সাশ্রয়ীভাবে ভ্রমণ করতে চান, তবে আপনাকে ভাল মত পরিকল্পনা করতে হবে।
Table of Contents
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়?
ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটা আগে নির্ধারণ করুন। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে ভ্রমণ করা সম্ভব। নীচে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার জন্য জনপ্রিয় কিছু ইউরোপীয় দেশগুলোর নাম উল্লেখ করা হলোঃ
- যুক্তরাজ্য (United Kingdom): লন্ডন, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য ভ্রমণ করা যায়।
- ফ্রান্স (France): প্যারিস, নিস, লিওঁ সহ বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করা যায়।
- জার্মানি (Germany): বার্লিন, মিউনিখ, হামবুর্গ সহ জার্মানির বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ সম্ভব।
- স্পেন (Spain): মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, সেভিল এবং আরও অনেক শহরে ভ্রমণ করা যায়।
- ইতালি (Italy): রোম, মিলান, ভেনিস এবং ফ্লোরেন্সে ভ্রমণ করা সম্ভব।
- নেদারল্যান্ডস (Netherlands): অ্যামস্টারডাম শহরটি খুবই জনপ্রিয়।
- বেলজিয়াম (Belgium): ব্রাসেলস, ব্রুগ, অ্যান্টওয়ার্পসহ বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করা যায়।
- পোল্যান্ড (Poland): ওয়ারসো, ক্রাকভ সহ পোল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করা যায়।
- হাঙ্গেরি (Hungary): বুদাপেস্ট শহরটি দর্শনীয় এবং সাশ্রয়ী।
- অস্ট্রিয়া (Austria): ভিয়েনা এবং স্যালজবুর্গে ভ্রমণ করা যায়।
- পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো: হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, সার্বিয়া, বুলগেরিয়া এবং আরও অনেক দেশ।
- দক্ষিণ ইউরোপ: গ্রিস, পর্তুগাল এবং মাল্টা সহ অন্যান্য দেশগুলোও জনপ্রিয় গন্তব্য।
এই দেশগুলোতে বাংলাদেশের নাগরিকরা সহজে ভ্রমণ করতে পারেন এবং অনেক দেশের জন্য ভিসা প্রাপ্তি সহজ এবং দ্রুত হয়।
ইউরোপে ভ্রমণের খরচ কত?
ইউরোপে ভ্রমণের খরচ দেশ এবং আপনি কীভাবে ভ্রমণ করবেন তার উপর নির্ভর করে। তবে, সাধারণভাবে বলা যায় যে, ইউরোপে ভ্রমণের খরচ তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হতে পারে, বিশেষত পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলিতে। যদি আপনি সাশ্রয়ীভাবে ভ্রমণ করতে চান, তবে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো ভালো বিকল্প হতে পারে।
এখানে কিছু প্রধান খরচের বিষয় তুলে ধরা হলোঃ
- ফ্লাইটঃ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে আসতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের খরচ কমপক্ষে ৪০০-১০০০ USD হতে পারে। তবে, অফ-পিক সিজনে এবং সস্তা এয়ারলাইন্সে আপনি ফ্লাইটের দাম কমাতে পারবেন।
- থাকাঃ ইউরোপে হোটেল বা এয়ারবিএনবি ব্যবস্থার খরচ প্রতি রাত ৫০-১৫০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। শহরের কেন্দ্রস্থলে থাকার পরিবর্তে আপনি শহরের বাইরে থাকতে পারেন, যা কম খরচে পড়বে।
- খাবারঃ ইউরোপে খাবারের খরচ প্রতিদিন প্রায় ২০-৫০ ইউরো হতে পারে, তবে আপনি কম খরচে খাবার খেতে চাইলে স্থানীয় রেস্টুরেন্টে বা বাজারে খেতে পারেন।
- পরিবহনঃ ইউরোপের অধিকাংশ শহরে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট খুবই সাশ্রয়ী। ট্রেন বা বাসে দৈনিক ভ্রমণ খরচ ১০-২০ ইউরো হতে পারে।
ইউরোপের ভিসা খরচ
ইউরোপের অংশ | দেশের নাম | স্টুডেন্ট ভিসা খরচ | ভিজিট ভিসা খরচ | ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ |
---|---|---|---|---|
পূর্ব ইউরোপ | রাশিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা, বেলারুশ, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, তুরস্ক, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বুলগেরিয়া, ক্রতার গুয়ানা, ক্রতারকের রিপাবলিক, ক্রোয়েশিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, রোমানিয়া | ৳৩০০,০০০-৳৭,০০,০০০ | ৳৩,৫০,০০০-৳৭,০০,০০০ | ৳৫,০০,০০০-৳৭,০০,০০০ |
পশ্চিম ইউরোপ | আইসল্যান্ড, অ্যান্ডোরা, আলবেনিয়া, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ইস্টোনিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, ইতালি, লাতভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালটা, মন্টিনিগ্রো, হল্যান্ড, নরওয়ে, পর্তুগাল, সান মারিনো | ৳১০,০০,০০০-৳২০,০০,০০০ | ৳১২,০০,০০০-৳১৬,০০,০০০ | ৳১২,০০,০০০-৳২০,০০,০০০ |
মধ্য ইউরোপ | অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড | ৳৪,০০,০০০-৳৭,০০,০০০ | ৳৪,০০,০০০-৳৫,০০,০০০ | ৳১০,০০,০০০-৳১২,০০,০০০ |
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া সহজ?
ইউরোপের কোন দেশে আপনি পেতে চান সেটা আগে ঠিক করুন। যদিও ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রয়োজন, কিছু দেশ রয়েছে যেখানে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পাওয়া সহজ এবং ভ্রমণ সহজ। এখানে কিছু ইউরোপীয় দেশগুলো দেওয়া হলো যেখানে যাওয়া তুলনামূলক সহজঃ
- পোল্যান্ড (Poland): পোল্যান্ডের ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ এবং এটি শেনজেন অঞ্চলের অংশ। পোল্যান্ডের ভিসা পাওয়া বাংলাদেশিদের জন্য অনেক সময় সোজা।
- হাঙ্গেরি (Hungary): হাঙ্গেরি ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত। শেনজেন ভিসা থাকলে এখানে প্রবেশ করা যায়।
- বুলগেরিয়া (Bulgaria): বুলগেরিয়া এখনও শেনজেন ভিসা নীতির আওতায় নেই, তবে এখানে যাওয়ার জন্য ভিসা পাওয়া সহজ।
- লিথুয়ানিয়া (Lithuania): লিথুয়ানিয়া ভিসার জন্য খুব কম ডকুমেন্টেশন প্রয়োজন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সহজে ভিসা পাওয়া যায়।
- এস্তোনিয়া (Estonia): শেনজেন ভিসা থাকলে এস্তোনিয়া ভ্রমণ সহজ। এখানে ভিসা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ।
- লাতভিয়া (Latvia): লাতভিয়াতে যাওয়ার জন্য ভিসা পাওয়া সহজ এবং এটি শেনজেন অঞ্চলের অংশ।
- জার্মানি (Germany): জার্মানির শেনজেন ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ, তবে এটি বড় দেশ হওয়ায় সঠিক প্রস্তুতি প্রয়োজন।
- পর্তুগাল (Portugal): পর্তুগাল ভিসা প্রক্রিয়াও সহজ এবং এটি দক্ষিণ ইউরোপের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।
এই দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ এবং আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে। তবে, সবসময় সর্বশেষ ভিসা নীতিমালা চেক করা উচিত।
কম খরচে ইউরোপের ভ্রমণের দেশগুলি
ইউরোপে ভ্রমণের জন্য কম খরচে যাওয়া যায় এমন কিছু দেশ রয়েছে। এসব দেশ ভ্রমণের জন্য একদিকে যেমন কম খরচ, তেমনি অন্যদিকে দারুণ সৌন্দর্যও রয়েছে। নিচে এমন কিছু সাশ্রয়ী দেশ উল্লেখ করা হলোঃ
- হাঙ্গেরিঃ হাঙ্গেরি, বিশেষত বুদাপেস্ট শহর, ইউরোপের অন্যতম সাশ্রয়ী শহর। এখানে খাবার, থাকা এবং দর্শনীয় স্থানগুলি খুবই সস্তা।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরি ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৪৫,০০০-৭০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ বাজেট হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৪,০০০-৬,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,০০০-১,৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- পোল্যান্ডঃ পোল্যান্ড একটি ঐতিহাসিক দেশ, যেখানে আপনি খুব কম খরচে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই দেশটির শহরগুলো সুন্দর এবং খরচ সাশ্রয়ী।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৪০,০০০-৭০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ বাজেট হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৪,০০০-৭,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,০০০-১,৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- বুলগেরিয়াঃ বুলগেরিয়া একটি সাশ্রয়ী ইউরোপীয় দেশ, যেখানে আপনি বাজেট-friendly হোটেল এবং সস্তা খাবারের অপশন পাবেন।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে বুলগেরিয়া ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৪৫,০০০-৭৫,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ বাজেট হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৩,৫০০-৫,৫০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ৮০০-১,২০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- রোমানিয়াঃ রোমানিয়া একটি কম খরচে ভ্রমণ করার জন্য উপযুক্ত দেশ। এখানে খাবার, থালা এবং পরিবহন খরচ অনেক সাশ্রয়ী।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে রোমানিয়া ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৪৫,০০০-৭৫,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ বাজেট হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৩,০০০-৫,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ৮০০-১,২০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- সার্বিয়াঃ সার্বিয়া ইউরোপের অন্যতম সাশ্রয়ী দেশগুলোর মধ্যে একটি। এখানে খাবার, হোটেল এবং পরিবহন খরচ অনেক কম।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়া ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৪০,০০০-৭০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ বাজেট হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৩,৫০০-৫,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ৮০০-১,২০০ টাকা খরচ হতে পারে।
এই দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে আপনাকে কম খরচে চলাচল, খাওয়া এবং থাকার সুযোগ পাবেন, যা আপনাকে ইউরোপের ভ্রমণকে আরো সাশ্রয়ী করে তুলবে।
ইউরোপে জনপ্রিয় ভ্রমণের স্থান
ইউরোপের অনেক দেশেই ভ্রমণের জন্য বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। কিছু প্রধান জনপ্রিয় গন্তব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ
- প্যারিস, ফ্রান্সঃ ফ্রান্স ইউরোপের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলোর মধ্যে একটি। বিশেষত প্যারিস শহর, যেখানে আইফেল টাওয়ার, লুভর মিউজিয়াম এবং নটরডেম ক্যাথেড্রাল রয়েছে। এখানে থাকার খরচ তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। তবে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এবং সস্তা খাবারের অপশন রয়েছে, যা খরচ কিছুটা কমাতে সহায়তা করে।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্সের প্যারিসে ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৫০,০০০-৮০,০০০ টাকা হতে পারে।
- থাকার খরচঃ ৩-৪ তারকা হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৬,০০০-১০,০০০ টাকা হতে পারে।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,৫০০-২,৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- জার্মানিঃ জার্মানি একটি সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক দেশ। বার্লিন, মিউনিখ, হ্যামবুর্গ এবং কলোনের মতো শহরগুলোতে পর্যটকরা প্রচুর ভ্রমণ করেন। জার্মানির পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অত্যন্ত উন্নত এবং বেশ সাশ্রয়ী।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ফ্লাইটের খরচ ৫৫,০০০-৯০,০০০ টাকা হতে পারে।
- থাকার খরচঃ ৩-৪ তারকা হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৫,০০০-৯,০০০ টাকা হতে পারে।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,২০০-২,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- বার্সেলোনা, স্পেনঃ স্পেন একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য, বিশেষত বার্সেলোনা এবং মাদ্রিদ শহর। এখানের পরিবহন ব্যবস্থা বেশ সাশ্রয়ী এবং খাবারের দামে ভিন্নতা রয়েছে, তবে সাধারণভাবে খরচ তুলনামূলক কম।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে স্পেনের বার্সেলোনা ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৫০,০০০-৮০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ বাজেট হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৪,০০০-৭,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,২০০-২,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- রোম, ইতালিঃ ইতালি ভ্রমণের জন্য একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় দেশ, বিশেষত রোম, ফ্লোরেন্স এবং ভেনিস শহরগুলোর জন্য। এখানে খাবার এবং থাকার খরচ অনেকটাই সাশ্রয়ী হতে পারে, তবে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দাম একটু বেশি হতে পারে।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালি ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৫০,০০০-৮০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ ৩-৪ তারকা হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৫,০০০-৮,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,০০০-২,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- নেদারল্যান্ডসঃ নেদারল্যান্ডসের অ্যামস্টারডাম শহর ভ্রমণের জন্য খুব জনপ্রিয়। শহরটি তার সুন্দর খাল, জাদুঘর এবং বাইক ভ্রমণের জন্য পরিচিত। তবে, খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডস ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৫৫,০০০-৯০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ ৩-৪ তারকা হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৬,০০০-১০,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ১,৫০০-২,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
- লন্ডন, যুক্তরাজ্যঃ লন্ডন, যুক্তরাজ্য একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। শহরটির বিখ্যাত স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিগ বেন, লন্ডন আই, টাওয়ার ব্রিজ, এবং ব্রিটিশ মিউজিয়াম। তবে, লন্ডনে থাকা এবং খাওয়ার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে।
- ফ্লাইট খরচঃ বাংলাদেশ থেকে লন্ডন ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৬০,০০০-১,২০,০০০ টাকা।
- থাকার খরচঃ ৩-৪ তারকা হোটেলে ১ রাত থাকার খরচ ৮,০০০-১৫,০০০ টাকা।
- খাবারের খরচঃ সস্তা খাবারের জন্য দিনে ২,০০০-৩,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে যেতে ভিসা প্রক্রিয়া
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে ভ্রমণ করতে হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় শেনজেন ভিসা প্রয়োজন। ইউরোপের কিছু দেশ ভিসা প্রক্রিয়ায় আলাদা নীতি অনুসরণ করে, তবে সাধারণভাবে ইউরোপে ভ্রমণের জন্য আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক জানা জরুরি। এখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ইউরোপে ভ্রমণের ভিসা প্রক্রিয়া বিস্তারিত দেওয়া হলোঃ
১. শেনজেন ভিসা
শেনজেন ভিসা ইউরোপের ২৬টি দেশ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে যাবার জন্য শেনজেন ভিসা আবেদন করতে হবে। শেনজেন ভিসা একবার পাওয়ার পর আপনি শেনজেন অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোতে যাতায়াত করতে পারেন। শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে নিম্নলিখিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবেঃ
- ভিসা আবেদন ফর্মঃ ইউরোপীয় দেশটির কনস্যুলেট বা এমব্যাসি থেকে শেনজেন ভিসার আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করুন। আবেদন ফর্মে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ভ্রমণ উদ্দেশ্য, থাকার জায়গা, আর্থিক অবস্থা এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করতে হবে।
- পাসপোর্টঃ আপনার পাসপোর্ট অবশ্যই ভিসা প্রাপ্তির পর কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদী হতে হবে। এটি ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট।
- ফটো: ইউরোপের দেশে যাওয়ার জন্য শেনজেন ভিসা আবেদনের জন্য আধুনিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন। ছবিটি হতে হবে স্পষ্ট, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে এবং ভিসা প্রক্রিয়া অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাপের।
- ভ্রমণ বীমাঃ ইউরোপের দেশে যাওয়ার পরে ইউরোপে ভ্রমণের সময় দুর্ঘটনা, রোগ, কিংবা অন্য কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে সাহায্য পাওয়ার জন্য ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড ভ্রমণ বীমার প্রমাণ আপনাকে জমা দিতে হবে। সাধারণত ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য মিনিমাম ৩০,০০০ ইউরো কভারেজের বীমা প্রয়োজন।
- ফ্লাইট বুকিংঃ আপনার ইউরোপীয় ভ্রমণ শুরু এবং শেষ করার জন্য ফ্লাইট বুকিংয়ের প্রমাণ জমা দিতে হবে। এটি আপনার আগমন এবং প্রস্থান সময় নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
- থাকার প্রমাণঃ ইউরোপে থাকার জন্য প্রমাণ হিসেবে আপনাকে হোটেল রিজার্ভেশন বা যদি কোন বন্ধু/পরিচিত ব্যক্তি আপনাকে থাকার জায়গা দেয়, তবে তাদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র বা থাকার প্রমাণ নিতে হবে।
- আর্থিক প্রমাণঃ আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ অন্যান্য আর্থিক প্রমাণ প্রদান করতে হবে, যা দেখাবে আপনি ভ্রমণ ও থাকার খরচ বহন করতে সক্ষম। সাধারণত, গত ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে। এছাড়াও, আয়কর রিটার্ন বা অন্যান্য প্রমাণ পেশ করা যেতে পারে।
- অন্যান্য ডকুমেন্টঃ আপনি যদি চাকরি করেন, তবে চাকরির প্রমাণপত্র এবং ছুটির অনুমতি চিঠি জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, যদি আপনি পড়াশোনা করছেন, তবে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এনরোলমেন্ট সনদ এবং ছুটির অনুমতি চিঠি প্রয়োজন হবে।
২. জাতীয় ভিসা (National Visa)
জাতীয় ভিসা (National Visa) সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো ইউরোপীয় দেশের জন্য প্রদান করা হয় এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী ভ্রমণ বা বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ভিসা সাধারণত শিক্ষার্থী, কর্মজীবী, পরিবার পুনর্মিলন, বা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হয়।
জাতীয় ভিসার বৈশিষ্ট্যঃ
- ব্যাপ্তিঃ এটি একটি নির্দিষ্ট ইউরোপীয় দেশের জন্য প্রযোজ্য এবং ওই দেশের বাইরে শেনজেন অঞ্চলে সীমিত ভ্রমণের সুযোগ দিতে পারে।
- মেয়াদঃ সাধারণত ৯০ দিনের বেশি সময়ের জন্য (৬ মাস বা তারও বেশি) প্রযোজ্য।
- উদ্দেশ্যঃ পড়াশোনা, কাজ, পরিবার পুনর্মিলন বা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
মনে রাখবেনঃ জাতীয় ভিসার প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে, তাই আগেভাগে আবেদন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. ইউরোপীয় দেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা শর্তাবলী
ভিসা পাওয়ার পর, কিছু শর্ত পালন করতে হবে, যেমনঃ
- আপনার শেনজেন ভিসা দিয়ে প্রথম যে দেশটি প্রবেশ করবেন, সে দেশটিতে প্রথমে যেতে হবে।
- ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইউরোপ থেকে ফিরতে হবে।
- ভিসার নিয়মের ভাঙলে আপনার পরবর্তী ভিসা আবেদন নাকচ হতে পারে।
সাধারণভাবে ইউরোপের শেনজেন ভিসা পাওয়ার জন্য প্রক্রিয়া ১৫-২০ কার্যদিবস সময় নিতে পারে, তবে এটি দেশের কনস্যুলেটের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।
৪. ইউরোপে ভ্রমণের জন্য ভিসা আবেদন পদ্ধতি
- আবেদন ফর্ম ডাউনলোড ও পূর্ণ করাঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটি নির্ধারণ করার পরে প্রথমে আপনাকে ইউরোপীয় দেশটির কনস্যুলেট বা এমব্যাসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে শেনজেন ভিসা আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। ফর্মটি পূর্ণাঙ্গভাবে এবং সঠিকভাবে পূর্ণ করতে হবে। ভুল তথ্য দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে, তাই সঠিক তথ্য প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ডকুমেন্টস প্রস্তুত করে জমা দেয়াঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটা নির্ধারণ করার পরে আবেদন ফরম পূরণ করুন। তারপর, আপনার প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট যেমন পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ফ্লাইট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন ইত্যাদি প্রস্তুত করতে হবে। এই ডকুমেন্টগুলি কনস্যুলেট অফিসে জমা দিতে হবে।
- ভিসা ফি প্রদানঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটা নির্ধারণ করে ভিসা ফি জমা দিতে হবে যা দেশভেদে আলাদা হতে পারে। ফি সাধারণত ব্যাংক ট্রান্সফার বা কনস্যুলেটের নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রদান করতে হয়। এটি সাধারণত আবেদন প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য অংশ, তাই যথাযথভাবে ফি প্রদান নিশ্চিত করুন।
- আবেদন পরবর্তী প্রক্রিয়াঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটা নির্ধারণ করে ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার পর, পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসার অবস্থা কনস্যুলেট থেকে জানানো হবে। সুতরাং, আগেভাগে আবেদন করা ভাল, যাতে সময়মতো ইউরোপের দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা পাওয়া যায়।
আপনার শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করার সময় সর্বশেষ তথ্য চেক করা উচিত, কারণ ভিসা নীতিমালায় পরিবর্তন হতে পারে।
ভ্রমণ খরচ কমানোর টিপস
ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটি নির্ধারণ করাতে হবে। তারপর ইউরোপের দেশে ভ্রমণের জন্য ভ্রমণ খরচ কমানোর কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলো যা আপনাকে সাশ্রয়ীভাবে ইউরোপে ভ্রমণ করতে সহায়ক হতে পারেঃ
- বাজেট ফ্লাইট বেছে নিনঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটা নির্ধারণ করে ভ্রমণের জন্য কম দামের ফ্লাইট খুঁজুন। অনেক সময় কম দামের এয়ারলাইন বা লো-কস্ট এয়ারলাইনগুলোতে ভ্রমণ করে খরচ কমানো সম্ভব। Skyscanner বা Kayak এর মতো সাইটে ফ্লাইট কম্পেয়ার করে সবচেয়ে কম দামে বিকল্প নির্বাচন করুন।
- হোস্টেল বা হোমস্টে ব্যবহার করুনঃ ইউরোপের বড় শহরগুলোতে হোটেল সাধারণত ব্যয়বহুল হয়। হোস্টেল বা হোমস্টে বেছে নিলে খরচ অনেক কম হতে পারে। Hostelworld বা Airbnb এর মাধ্যমে সস্তা থাকার জায়গা খুঁজুন।
- লোকাল ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুনঃ ট্যাক্সি বা উবারের পরিবর্তে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুন। ইউরোপের অনেক শহরে ট্রেন, বাস, অথবা মেট্রো সিস্টেম অত্যন্ত কার্যকর এবং সস্তা। Eurail অথবা Omio এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কিনুন।
- অফ-পিক সিজনে ভ্রমণঃ উচ্চ পর্যটন মৌসুমের বদলে অফ-পিক সিজনে ইউরোপে ভ্রমণ করলে আপনি ফ্লাইট, হোটেল, এবং অন্যান্য খরচে সাশ্রয় করতে পারবেন। সাধারণত বসন্ত এবং শরত্কালে ভ্রমণ করা ভাল, কারণ এই সময়ে ভিড় কম থাকে এবং দামও কম থাকে।
- অফলাইন অ্যাপ ব্যবহারঃ ইউরোপের শহরগুলিতে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে সাশ্রয়ী ভ্রমণের জন্য স্থানীয় ট্রান্সপোর্ট অ্যাপ ব্যবহার করুন। এতে আপনাকে সঠিক রুট এবং ভাড়া সহজেই জানতে পারবেন, যা আপনাকে অতিরিক্ত খরচ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করবে।
- স্থানীয় খাবার খাওয়াঃ বড় রেস্টুরেন্টের পরিবর্তে স্থানীয় ক্যাফে বা বাজারে খাবার খেলে আপনি অনেক টাকা বাঁচাতে পারবেন। ইউরোপের অনেক শহরে রাস্তার খাবারও খুব সুস্বাদু এবং সাশ্রয়ী।
- বিনামূল্যে দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করুনঃ অনেক শহরে কিছু দর্শনীয় স্থান বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ দেয়, যেমন পার্ক, মিউজিয়াম বা ঐতিহাসিক স্থান। নির্দিষ্ট দিনগুলিতে বিভিন্ন মিউজিয়াম বা গ্যালারী বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকে।
- আগে থেকে বুকিং করুনঃ ফ্লাইট, হোটেল, এবং ট্রান্সপোর্টের টিকিট আগেই বুকিং করতে পারলে সস্তায় পাওয়া যায়। কিছু সময় আগেই পরিকল্পনা করলে বিশেষ ডিসকাউন্ট পাওয়া যেতে পারে।
- সুখী হতে না হলে ট্যুর গাইডিং এড়িয়ে চলুনঃ কিছু ট্যুর গাইডিং সেবাগুলি খরচ বৃদ্ধি করতে পারে। স্থানীয় মানুষ বা অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করে নিজেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন।
- শুক্রবার এবং শনিবারে ভ্রমণ করুনঃ সপ্তাহের এই দিনগুলিতে অনেক জায়গায় ডিসকাউন্ট পাওয়া যায় এবং ভিড়ও কম থাকে।
ইউরোপ ভ্রমণের জন্য সেরা সময়
ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটি নির্ধারণ করার পরে ইউরোপে ভ্রমণের জন্য সেরা সময় নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের অভিজ্ঞতা চান এবং আপনার ভ্রমণ বাজেট কী রকম। তবে সাধারণত, নিম্নলিখিত সময়গুলো ইউরোপ ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযোগীঃ
- গ্রীষ্মকাল (জুন-অগাস্ট): গ্রীষ্মকাল ইউরোপ ভ্রমণের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় সময়। এই সময়টাতে ইউরোপের অধিকাংশ দেশগুলি উষ্ণ ও আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। তবে, এটি শীর্ষ পর্যটন মৌসুম হওয়ায় দাম বেশী থাকে এবং ভিড় থাকে। সেরা ইউরোপীয় শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে প্যারিস, রোম, বার্সেলোনা।
- শরৎকাল (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর): পতনকাল হলো ইউরোপ ভ্রমণের জন্য একটি অদ্ভুত সময়, কারণ তাপমাত্রা ভালো থাকে এবং ভিড় কম থাকে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসগুলো বিশেষভাবে উপযুক্ত, কারণ প্রকৃতি সুন্দর এবং পর্যটন স্থানগুলোতে কম ভিড় থাকে। এটি সস্তা এবং উপভোগ্য ভ্রমণ হতে পারে।
- শীতকাল (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারী): শীতকাল ইউরোপের জন্য একটি বিশেষ সময়, বিশেষত স্কি রিসোর্টে যাওয়ার জন্য। শীতকালীন খেলাধুলা পছন্দ করা ভ্রমণকারীদের জন্য এটি আদর্শ। অল্প খরচে ইউরোপের বড় শহরগুলোর পর্যটন করতে চাইলে শীতকালও একদম সঠিক সময় হতে পারে, কারণ আপনি ডিসকাউন্ট এবং অফার পেতে পারেন।
- বসন্তকাল (মার্চ-মে): বসন্তকাল ইউরোপের জন্য একটি মনোরম সময়, যেখানে আবহাওয়া খুবই সুখকর থাকে। এই সময়টাতে ইউরোপের অনেক শহরে ফুলের সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায় এবং প্রকৃতি খুবই সতেজ থাকে। বসন্তকাল ভ্রমণের জন্য খুবই উপযুক্ত কারণ ভিড় কম এবং আপনি কম খরচে ভ্রমণ করতে পারবেন।
শেষ কথা
ইউরোপে ভ্রমণ সত্যিই একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে, তবে এটি সঠিক পরিকল্পনা এবং বাজেট অনুযায়ী হওয়া উচিত। ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান সেটি নির্ধারণ করুন। সাশ্রয়ীভাবে ইউরোপ ভ্রমণ করতে হলে আপনার কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে, যেমন সস্তা ফ্লাইট এবং পরিবহন ব্যবহার করা, হোটেল খরচ কমানো এবং স্থানীয় খাবার খাওয়া। ইউরোপের নানা দেশ এবং তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করবে, যা দীর্ঘদিন মনে থাকবে।