অল্প টাকায় বাসা খোঁজা বর্তমান সময়ে ঢাকায় বা আশপাশের জন্য এক কঠিন কাজ। প্রতিনিয়ত ভাড়া বাড়ছে, চাহিদা বেশি – ফলে অনেকেই তাদের বাজেটের মধ্যে উপযুক্ত বাসা খুঁজে পেতে হিমশিম খান। বিশেষ করে ছাত্র, নতুন পেশাজীবী, ছোট পরিবার বা ব্যাচেলরদের জন্য অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে চিন্তার কিছু নেই। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ঢাকার কোন কোন এলাকায় অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া যায়, কীভাবে আপনি অনলাইন কিংবা অফলাইন মাধ্যমে খোঁজ নিতে পারেন, মেস বা সাবলেট অপশন বিবেচনা করবেন কিনা এবং কীভাবে কিছু কৌশল মেনে চললে আপনি আপনার বাজেটের মধ্যেই একটি ভালো বাসা পেতে পারেন।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক – অল্প টাকায় বাসা ভাড়া কোথায় পাওয়া যায় এবং আপনি কীভাবে শুরু করবেন বাসা খোঁজার যাত্রা।
Table of Contents
অল্প টাকায় বাসা ভাড়ার জন্য ঢাকার কিছু এলাকা
অল্প টাকায় বাসা ভাড়ার জন্য ঢাকার কিছু কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে তুলনামূলকভাবে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া যায়। নিচে এমন কিছু এলাকার বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
- মিরপুর –মিরপুর ঢাকার উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত একটি বৃহৎ আবাসিক এলাকা যেখানে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া যায়। এখানে ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য নানা ধরনের সাশ্রয়ী ফ্ল্যাট এবং মেস পাওয়া যায়।
- ভাড়ার সীমাঃ ৮,০০০ – ২০,০০০ টাকা
- সুবিধাঃ বাজার, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা
- জনপ্রিয় ব্লকঃ সেকশন ১, ৬, ১০, ১১, ১২
- যাত্রাবাড়ী –ঢাকার দক্ষিণ অংশে অবস্থিত যাত্রাবাড়ী এলাকাটি ট্রান্সপোর্ট হাব হিসেবেও পরিচিত। অল্প টাকায় বাসা ভাড়ার জন্য এটি আদর্শ একটি এলাকা।
- ভাড়ার সীমাঃ ৮,০০০ – ২০,০০০ টাকা
- সুবিধাঃ বাজার, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা
- জনপ্রিয় ব্লকঃ সেকশন ১, ৬, ১০, ১১, ১২
- খিলগাঁও –মিরপুর ঢাকার উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত একটি বৃহৎ আবাসিক এলাকা। এখানে ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য নানা ধরনের সাশ্রয়ী ফ্ল্যাট এবং মেস পাওয়া যায়।
- ভাড়ার সীমাঃ ৮,০০০ – ২০,০০০ টাকা
- সুবিধাঃ বাজার, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা
- জনপ্রিয় ব্লকঃ সেকশন ১, ৬, ১০, ১১, ১২
- পল্লবী –পল্লবী মিরপুরের একটি অংশ এবং উত্তরা-আশেপাশে অবস্থিত। এটি ঘনবসতিপূর্ণ হলেও ভাড়ার দিক থেকে এখনও সাশ্রয়ী।
- ভাড়ার সীমাঃ ৮,০০০ – ১৬,০০০ টাকা
- সুবিধাঃ মেট্রোরেল, বাজার, স্কুল এবং হসপিটাল
- মেসের প্রচুর অপশন পাওয়া যায়
- হাজারীবাগ –হাজারীবাগ ঢাকার পুরান অংশের কাছাকাছি এবং বেশ পুরনো একটি এলাকা হলেও এখানেও অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া সম্ভাব। তবে রাস্তাঘাট কিছুটা সংকীর্ণ।
- ভাড়ার সীমাঃ ৬,০০০ – ১৪,০০০ টাকা
- সুবিধাঃ লেদার ফ্যাক্টরি, স্থানীয় বাজার, পুরান ঢাকার নিকটে
- উপযুক্তঃ নিম্ন আয়ের লোকজন ও ছাত্রী/ছাত্রদের জন্য
এই এলাকাগুলোতে সাশ্রয়ী ভাড়ায় থাকার পাশাপাশি নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়, যা মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের জন্য অনেকটাই উপযুক্ত করে তোলে।
গুলশানের কাছাকাছি সাশ্রয়ী এলাকা
গুলশান একটি অভিজাত ও বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় এখানকার বাসা ভাড়া সাধারণত খুবই বেশি। তবে আশপাশে কিছু এলাকা আছে যেখান থেকে সহজেই গুলশানে যাতায়াত করা যায় এবং যেখানে ভাড়া তুলনামূলকভাবে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া সম্ভাব। নিচে এমন কিছু এলাকার বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
- মহাখালী –গুলশানের একদম কাছেই অবস্থিত মহাখালী একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা। এখানকার রাস্তাঘাট চওড়া এবং হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্টসহ সবধরনের নাগরিক সুবিধা বিদ্যমান।
- গড় মাসিক ভাড়াঃ প্রায় ১৭,০০০ টাকা
- ২ বেডরুম” প্রায় ১৫,০০০ টাকা
- ৩ বেডরুমঃ প্রায় ২৩,০০০ টাকা
- বিশেষ সুবিধাঃ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, হাসপাতাল ও অফিস কাছেই
- বাড্ডা –গুলশানের পূর্ব পাশে অবস্থিত বাড্ডা বর্তমানে বসবাসের জন্য একটি জনপ্রিয় এলাকা হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিত সড়ক ও ব্লকভিত্তিক গঠন এটিকে আরও উপযোগী করে তুলেছে।
- গড় মাসিক ভাড়াঃ প্রায় ১৪,০০০ টাকা
- ৩ বেডরুমঃ প্রায় ১৮,০০০ টাকা
- বিশেষ সুবিধাঃ স্কুল, হাসপাতাল, বাজার এবং অফিস কাছাকাছি
- নিকেতন –মহাখালীর দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই এলাকা গুলশানের ঠিক গা ঘেঁষা। পরিবার নিয়ে থাকার জন্য একটি পরিষ্কার ও শান্তিপূর্ণ এলাকা হলেও তুলনামূলকভাবে ভাড়া একটু বেশি।
- গড় মাসিক ভাড়াঃ প্রায় ৩৫,০০০ টাকা
- ৩ বেডরুমঃ প্রায় ৩৬,০০০ টাকা
- বিশেষ সুবিধাঃ নিরাপদ, ছিমছাম পরিবেশ
- আফতাবনগর – আফতাবনগর নতুন একটি আবাসিক এলাকা যা গুলশান ও বাড্ডার কাছাকাছি। এখানে উন্নয়ন দ্রুত হচ্ছে এবং আবাসন খরচ এখনো তুলনামূলকভাবে কম। এ এলাকায় অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া সম্ভাব।
- গড় মাসিক ভাড়াঃ প্রায় ১৬,০০০ টাকা
- ২ বেডরুমঃ প্রায় ১৩,০০০ টাকা
- ৩ বেডরুমঃ প্রায় ১৯,০০০ টাকা
- বিশেষ সুবিধাঃ স্কুল, হাসপাতাল ও খেলার মাঠের কাছাকাছি
- বনশ্রী –বনশ্রী একটি পরিচ্ছন্ন ও সংগঠিত আবাসিক এলাকা, যেখানে পরিবার নিয়ে থাকতে চমৎকার। এখানকার বাড়িওয়ালাদের অ্যাসোসিয়েশন সক্রিয়ভাবে এলাকার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা দেখে।
- গড় মাসিক ভাড়াঃ প্রায় ১৫,৬৩০ টাকা
- ২ বেডরুমঃ প্রায় ১২,৪৪৪ টাকা
- ৩ বেডরুমঃ প্রায় ১৭,৪৬২ টাকা
- বিশেষ সুবিধাঃ পরিবার-বান্ধব পরিবেশ, স্কুল ও বাজার সহজলভ্য
এই এলাকাগুলো গুলশানের কাছাকাছি হওয়ায় আপনি প্রতিদিন অফিস বা ব্যবসায় যাতায়াত করতে পারবেন স্বল্প সময়েই। একই সঙ্গে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া সম্ভব।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া খোঁজা
প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে বাসা খোঁজার প্রক্রিয়াটি এখন অনেক সহজ হয়েছে। আগে যেখানে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে বা পরিচিতদের মাধ্যমে খোঁজ নিতে হতো, এখন তা সম্ভব অনলাইনেই। নিচে কিছু জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম এবং সেগুলো ব্যবহারের টিপস তুলে ধরা হলোঃ
- Bproperty–
- বাংলাদেশের অন্যতম বড় রিয়েল এস্টেট প্ল্যাটফর্ম।
- আপনি এলাকা, বাজেট ও রুম সংখ্যা অনুযায়ী ফিল্টার করে খুঁজতে পারবেন।
- বাসার ছবি ও বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।
- ভিউ ও সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করার সুবিধা রয়েছে।
- Bikroy–
- বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাসিফাইড অ্যাডস সাইট।
- এখানে ব্যক্তি মালিকদের কাছ থেকেও বাসা ভাড়া সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়।
- কম দামে সাবলেট, মেস, ফ্ল্যাট ইত্যাদির অফার থাকে।
- ফোন নম্বর ও লোকেশন উল্লেখ থাকে, সরাসরি যোগাযোগ করা যায়।
- THE TOLET–
- বিশেষভাবে ভাড়ার জন্য তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম।
- ব্যাচেলর, পরিবার, অফিস, দোকান ইত্যাদি ক্যাটাগরি অনুযায়ী খোঁজার সুবিধা।
- লোকেশনভিত্তিক ফিল্টার আছে (যেমন: গুলশান, মিরপুর, উত্তরা)।
- ফেসবুক লগইন করেই বিজ্ঞাপন দিতে ও সংরক্ষণ করতে পারবেন।
- Facebook Marketplace ও ফেসবুকের বাসা ভাড়া বিষয়ক গ্রুপসমূহ –
- Facebook Marketplace-এ স্থানীয় বাসা/ফ্ল্যাট খোঁজার জন্য জনপ্রিয় মাধ্যম।
- ‘ঢাকা বাসা ভাড়া’, ‘To-let in Dhaka’, ‘Room Rent BD’ ইত্যাদি নামের গ্রুপগুলোতে প্রতিদিন নতুন পোস্ট আসে।
- ভাড়া কম থাকলেও কিছু স্ক্যাম থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
- পোস্টে মালিকের নাম্বার, লোকেশন ও ছবি দেখা যায়।
মেস বা সাবলেটঃ অল্প খরচের আরেক বিকল্প
যদি আপনি একা থাকেন বা একজন ছাত্র বা তরুণ পেশাজীবী হন, তবে মেস বা সাবলেট বাসা ভাড়া নেওয়া হতে পারে আপনার জন্য অল্প টাকায় বাসা ভাড়া সবচেয়ে ভালো সমাধান। এই ধরণের থাকার ব্যবস্থা সাধারণত কম খরচে, সহজলভ্য এবং ফ্লেক্সিবল হয়ে থাকে।
- মেসে থাকার সুবিধা-
- মাসিক ভাড়া সাধারণ বাসার চেয়ে ৩০-৫০% পর্যন্ত কম।
- ইউটিলিটি বিল (পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট) সবাই মিলে ভাগ করে দেওয়া হয়।
- ফার্নিশড রুম পাওয়া যায় – বিছানা, ফ্যান, টেবিল থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
- নতুন শহরে আসা শিক্ষার্থী বা ব্যাচেলরদের জন্য সহজ ও দ্রুত সমাধান।
- সাধারণত অগ্রিম টাকার পরিমাণ কম হয়।
- সাবলেটের সুবিধা-
- একটি বাসার নির্দিষ্ট রুম বা অংশ ভাড়া নেওয়া যায়।
- ফ্যামিলি বা ব্যাচেলরের সাথে থাকার বিকল্প – অনেকে আলাদা কিচেন বা বাথরুমও দেয়।
- কম সময়ের জন্য (১-৬ মাস) থাকার ব্যবস্থা করা যায়।
- ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম এবং ইন্টেরিয়র অনেক সময় ভালো অবস্থায় থাকে।
- কোথায় খুঁজবেন?
- Facebook গ্রুপ: যেমন “মেস / সাবলেট চাই”, “Room Rent Dhaka”, “To-let BD”।
- Facebook Marketplace
- OLX, Bikroy, Tolet.com.bd ওয়েবসাইটগুলো
- সতর্কতা-
- চুক্তিপত্র না থাকলেও প্রাথমিক শর্তাবলি স্পষ্ট করে নিন।
- রুমমেটদের সম্পর্কে খোঁজ নিন এবং পরিবেশ মূল্যায়ন করুন।
- অগ্রিম অর্থ দেওয়ার আগে বাসাটি দেখে নিন এবং বিশ্বাসযোগ্যতার নিশ্চয়তা নিন।
মেস বা সাবলেট সিস্টেম ঢাকায় বিশেষ করে ছাত্র ও ব্যাচেলরদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। অল্প খরচে নিরাপদ এবং ব্যবহারযোগ্য থাকার ব্যবস্থা পেতে এই দুটি অপশন যথেষ্ট কার্যকর।
অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পেতে কিছু কার্যকর টিপস
ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া খুঁজে পাওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু কৌশল অনুসরণ করলে আপনার খরচ অনেকটা কমানো সম্ভব। নিচে কিছু কার্যকর পরামর্শ তুলে ধরা হলোঃ
- পরিচিতদের মাধ্যমে খোঁজ নেওয়া-
- বন্ধু, আত্মীয়, সহকর্মী বা প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খোঁজ নিলে নির্ভরযোগ্য বাসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
- অনেক সময় অনলাইনে বিজ্ঞাপন না দিয়ে সরাসরি পরিচিতদের মাধ্যমে মালিকরা বাসা ভাড়া দেন।
- মালিকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন-
- এজেন্ট ছাড়াই সরাসরি মালিকের সাথে আলোচনা করলে আপনি কমিশন এড়াতে পারবেন।
- অনেক সময় মালিকেরা পরিচিত ভাড়াটিয়াদের কম ভাড়ায় বাসা দিতে রাজি হন।
- ভাড়ার শর্তাবলী নিয়ে আলোচনার সুযোগও বেশি থাকে।
- অপ্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বাদ দিন-
- লিফট, জেনারেটর, ইন্টেরিয়র ডিজাইন, সার্ভিস চার্জ – এসব সুবিধা থাকলে ভাড়া অনেক বেড়ে যায়।
- আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সুবিধাসম্পন্ন বাসা খোঁজার চেষ্টা করুন।
- কম ফ্লোরে বাসা খোঁজলে লিফটের খরচ এড়ানো যায়।
- শহরের কেন্দ্রে নয়, আশেপাশে খোঁজ করুন-
- গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডির মতো এলাকাগুলোর পরিবর্তে আশেপাশের এলাকায় (যেমন মহাখালী, আফতাবনগর, মিরপুর) খোঁজ নিন।
- একই ধরণের বাসা অনেক কম দামে পাওয়া সম্ভব।
- Facebook গ্রুপে সক্রিয় থাকুন-
- “ঢাকা বাসা ভাড়া”, “To-let in BD”, “Room Rent Dhaka” ইত্যাদি গ্রুপে নিয়মিত চোখ রাখুন।
- অনেকে প্রতিদিন বাসার আপডেট দিয়ে থাকেন এবং আপনি সরাসরি পোস্টে কমেন্ট বা ইনবক্স করে যোগাযোগ করতে পারেন।
উপরের পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে আপনি সহজেই আপনার বাজেট অনুযায়ী অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পেতে পারেন। মূল বিষয় হলো — সক্রিয় থাকা, ধৈর্য রাখা এবং সঠিক সময় ও কৌশল কাজে লাগানো।
ভাড়ার পরিমাণ কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
বাসা ভাড়ার হার বিভিন্ন কারণে এলাকা, বাসার ধরন ও চাহিদার ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে বাসার ভাড়ার পরিমাণের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন প্রধান বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হলোঃ
- অবস্থান –
- শহরের কেন্দ্র যেমন গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডি – এসব এলাকায় ভাড়া বেশি হয়।
- প্রান্তিক বা শহরের বাইরে (যেমন সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ) এলাকায় তুলনামূলক কম ভাড়া পাওয়া যায়।
- ব্যবসায়িক কেন্দ্র বা অফিস জোনের কাছাকাছি এলাকা – যেমন মহাখালী, তেজগাঁও – এখানেও চাহিদা অনুযায়ী ভাড়া বেশি হয়।
- বাসার আকার (Apartment Size)-
- ১ বেডরুম বাসা সাধারণত ব্যাচেলর বা নতুন দম্পতির জন্য উপযোগী এবং ভাড়া কম হয়।
- ২ বা ৩ বেডরুমের বাসায় পরিবার থাকার জন্য উপযোগী হওয়ায় ভাড়া বেশি হয়।
- বেডরুম ছাড়াও ড্রইং, ডাইনিং, বারান্দা ও স্টোর রুম থাকলে ভাড়া বাড়ে।
- অবকাঠামোগত সুবিধা (Facilities & Amenities)-
- লিফট, জেনারেটর, ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা ব্যবস্থা, গ্যারেজ থাকলে বাসার ভাড়া স্বাভাবিকভাবেই বেশি হয়।
- ওয়াটার ফিল্টার, ইন্টারকম, সিসিটিভি – এসব সুবিধা থাকলে ভাড়া আরও বৃদ্ধি পায়।
- কম সুবিধাযুক্ত ভবনে ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম হয়।
- বাসার অবস্থা (Condition of the Apartment)-
- নতুন বা সদ্য রেনোভেট করা বাসার ভাড়া সাধারণত বেশি হয়।
- পুরনো বাসা বা রক্ষণাবেক্ষণ না করা বাসায় ভাড়া কমে আসে।
- ভবনের বয়স, প্লাস্টার, রঙ, টাইলসের অবস্থা, পানির লাইন, বাথরুম ফিটিং ইত্যাদিও মূল্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
- বাজারের চাহিদা ও ঋতুভিত্তিক পরিবর্তন-
- রেডি ফ্ল্যাট বা বসবাসের উপযুক্ত বাসার চাহিদা বেশি হলে মালিকেরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন।
- স্কুল-কলেজ খোলার আগে বা সরকারি চাকরির বদলির মৌসুমে ভাড়ার চাহিদা বাড়ে।
- বর্ষাকাল বা রমজানের সময়ে ভাড়া তুলনামূলক কমে যেতে পারে।
এই উপাদানগুলোর সমন্বয়ে বাসার ভাড়ার পরিমাণ নির্ধারিত হয়। তাই বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় এসব বিষয় মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিলে আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী অল্প টাকায় বাসা ভাড়া নিতে পারবেন।
শেষ কথা
অল্প টাকায় বাসা ভাড়া খোঁজা চ্যালেঞ্জিং হলেও অসম্ভব নয়। আপনি যদি এলাকা, মাধ্যম এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখেন, তাহলে খুব সহজেই আপনার বাজেটের মধ্যে অল্প টাকায় বাসা ভাড়া পেতে পারেন। আপনার প্রয়োজন ও অগ্রাধিকার অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন এবং বাসা ভাড়ার পূর্বে যাচাই-বাছাই করে চুক্তি সম্পন্ন করুন।