বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান, সম্প্রতি ৫০টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য একটি বিস্তৃত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। স্থায়ী ও অস্থায়ী উভয় ধরনের পদ অন্তর্ভুক্ত এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের সরকারি চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য একটি বড় সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে ৫০টি পদে বিশাল নিয়োগঃ আবেদনের সুযোগ ২৫ জুন পর্যন্ত
এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মোট ১১টি ভিন্ন ধরনের পদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিটি পদে প্রার্থীদের নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকতে হবে। যারা সরকারি চাকরিতে আগ্রহী, তারা এই সুযোগকে হাতছাড়া না করে সময়মতো আবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। নিচে প্রতিটি পদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
নিয়োগকৃত পদের তালিকা ও বিবরণ
ক্রমিক | পদের নাম | পদসংখ্যা | বেতন স্কেল | গ্রেড |
---|---|---|---|---|
১ | হিসাবরক্ষণ অফিসার | ১ | ২২,০০০–৫৩,০৬০ টাকা | নবম |
২ | জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা | ১৩ (১১টি স্থায়ী, ২টি অস্থায়ী) | ২২,০০০–৫৩,০৬০ টাকা | নবম |
৩ | হিসাবরক্ষক | ১ | ১১,৩০০–২৭,৩০০ টাকা | ১২তম |
৪ | সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর | ১ | ১১,০০০–২৬,৫৯০ টাকা | ১৩তম |
৫ | উচ্চমান সহকারী | ১ | ১০,২০০–২৪,৬৮০ টাকা | ১৪তম |
৬ | লাইব্রেরিয়ান কাম মিউজিয়াম কিপার | ১৭ (৮টি স্থায়ী, ৯টি অস্থায়ী) | ১০,২০০–২৪,৬৮০ টাকা | ১৪তম |
৭ | প্রজেক্টর অপারেটর | ১ | ৯,৭০০–২৩,৪৯০ টাকা | ১৫তম |
৮ | অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক | ৮ | ৯,৩০০–২২,৪৯০ টাকা | ১৬তম |
৯ | ডেটা এন্ট্রি অপারেটর | ৫ | ৯,৩০০–২২,৪৯০ টাকা | ১৬তম |
১০ | ইলেকট্রিশিয়ান | ১ | ৯,৩০০–২২,৪৯০ টাকা | ১৬তম |
১১ | বুক বেয়ারার | ১ | ৮,৫০০–২০,৫৭০ টাকা | ১৯তম |
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত ওয়েবসাইট http://shishuacademy.teletalk.com.bd/ এর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। কোনো প্রকার সরাসরি বা ডাকযোগে আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রতিটি প্রার্থীকে অনলাইনে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে এবং নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশিকা পাওয়া যাবে এই লিংকে- বিস্তারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি।
আবেদনের শেষ তারিখ
আবেদন গ্রহণের শেষ তারিখ: ২৫ জুন, ২০২৫। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন সম্পন্ন না করলে কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না। তাই আগ্রহীদের প্রতি অনুরোধ, শেষ মুহূর্তের অপেক্ষা না করে যথাসময়ে আবেদন করে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
কেন শিশু একাডেমিতে চাকরি করা হবে আপনার জন্য আকর্ষণীয়?
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কেবল একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি শিশুদের জন্য সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্প ও নৈতিক শিক্ষার উন্নয়নমূলক কেন্দ্র হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেবল একটি পেশাগত সুযোগই নয়, বরং একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের অংশীদার হওয়ার সুযোগও বটে।
চাকরির সুবিধাসমূহ
প্রতিটি পদে নিয়মিত সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন প্রদান করা হবে। সেই সঙ্গে থাকবে অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা, যেমনঃ
- বছরে দুটি উৎসব ভাতা
- চাকরির নিরাপত্তা
- পেনশন সুবিধা
- সরকার নির্ধারিত ছুটি
- চিকিৎসা ভাতা
- প্রশিক্ষণ ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টের সুযোগ
প্রার্থীর যোগ্যতা ও প্রস্তুতি
প্রতিটি পদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা রয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত, দক্ষ, এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষম প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কিছু পদের জন্য কম্পিউটার দক্ষতা আবশ্যক। আবেদনকারীদের অবশ্যই সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে MCQ ও লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষার জন্যও মানসিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি।
আবেদন ফি ও কনফার্মেশন
আবেদন ফরম পূরণের পর নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে। সঠিকভাবে ফি প্রদান না হলে আবেদন বাতিল হিসেবে গণ্য হবে। আবেদনপত্র সাবমিট করার পর প্রার্থীদের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করে রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ ভবিষ্যতে প্রবেশপত্র ডাউনলোড ও অন্যান্য যোগাযোগের জন্য তা প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি দেশের শিশুদের সৃজনশীলতা ও বিকাশের জন্য একটি অগ্রণী সরকারি প্রতিষ্ঠান। এই একাডেমি সম্পর্কে অনেকের মনে নানা প্রশ্ন জাগে। এখানে শিশু একাডেমি সম্পর্কিত কিছু সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো, যা চাকরিপ্রার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও কাজে আসবে।
প্রশ্ন ১ঃ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কী?
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান, যা মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের শিশুদের মানসিক, শারীরিক এবং নৈতিক বিকাশে সহায়তা করা। একাডেমিটি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক, সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের প্রতিভা বিকাশে ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন ২ঃ শিশু একাডেমির প্রধান কার্যক্রম কী কী?
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কার্যক্রম হলোঃ
- সাহিত্য, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, সংগীত ও নাটকের প্রশিক্ষণ
- শিশু সাহিত্য প্রকাশ ও বিতরণ
- জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা আয়োজন
- শিশু বিষয়ক কর্মশালা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কোর্স
- শিশুদের জন্য পাঠাগার ও মিউজিয়াম পরিচালনা
প্রশ্ন ৩ঃ শিশু একাডেমির প্রধান কার্যালয় কোথায় অবস্থিত?
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির প্রধান কার্যালয় ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত। এটি একটি সুপরিচিত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত, যেখানে নিয়মিত শিশুদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ৪ঃ শিশু একাডেমিতে চাকরি করতে কী ধরনের যোগ্যতা লাগে?
প্রত্যেকটি পদের জন্য আলাদা আলাদা শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। যেমন উচ্চ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কিছু প্রযুক্তিগত পদে ডিপ্লোমা বা বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে। নিচের পদের উপর নির্ভর করে এই যোগ্যতাসমূহ ভিন্ন হয়।
প্রশ্ন ৫: নিয়োগ পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া হয়?
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সাধারণত দুটি ধাপ থাকে: লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষা। নির্ধারিত যোগ্যতা অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রথমে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়।
প্রশ্ন ৬ঃ অনলাইনে কীভাবে আবেদন করতে হয়?
অনলাইনে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে যেতে হবে http://shishuacademy.teletalk.com.bd/ এই ওয়েবসাইটে। সেখানে নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আবেদন ফি জমা দেওয়ার জন্য Teletalk মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
প্রশ্ন ৭ঃ আবেদন ফি কত?
আবেদন ফি প্রতিটি পদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত গ্রেড অনুযায়ী ফি নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, নবম গ্রেডের জন্য ফি কিছুটা বেশি হতে পারে, আর নিম্ন গ্রেডের জন্য তুলনামূলক কম। ফি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা থাকে।
প্রশ্ন ৮ঃ আবেদনের শেষ তারিখ কবে?
এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে আবেদন করার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ জুন, ২০২৫। তাই আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
প্রশ্ন ৯ঃ শিশু একাডেমির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
শিশু একাডেমি আগামী দিনে আরও আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও সার্বিক শিশু উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে। ডিজিটাল পাঠাগার, ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নতুন জেলা অফিস স্থাপনসহ দেশব্যাপী শিশু সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একাডেমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রশ্ন ১০ঃ শিশু একাডেমিতে শিশুদের জন্য কী ধরনের সুযোগ রয়েছে?
শিশুরা এই একাডেমিতে বিনামূল্যে বা নামমাত্র ফি দিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে নাট্যকলা, সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, সৃজনশীল লেখা ও বক্তৃতা প্রশিক্ষণ। একাডেমির পাঠাগারে শিশুদের জন্য উপযোগী বই-পত্র ও গবেষণামূলক সামগ্রীও রয়েছে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শুধুমাত্র শিশুদের বিকাশের কেন্দ্রই নয়, বরং এটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। একাডেমির অধীনে পরিচালিত নিয়োগ কার্যক্রম দেশের দক্ষ ও প্রতিভাবান নাগরিকদের সরকারি চাকরির সুযোগ দিচ্ছে। যারা শিশুদের জন্য কাজ করতে আগ্রহী এবং সামাজিক উন্নয়নে অংশ নিতে চান, তারা এই একাডেমিতে যোগদানের মাধ্যমে একটি গৌরবজনক পেশাজীবনের সূচনা করতে পারেন।
আপনার যদি শিশু একাডেমি সম্পর্কে আরও কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে আপনি একাডেমির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা সংশ্লিষ্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পিডিএফ লিংক থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেশের বিভিন্ন যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের জন্য একটি বড় সুযোগ। যারা শিশুদের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী এবং একটি স্থিতিশীল সরকারি চাকরি চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। এখনই প্রস্তুতি নিন এবং সময়মতো অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করুন।
ভবিষ্যতের উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়ার পথে এটি হতে পারে আপনার প্রথম পদক্ষেপ।