আজকের ব্লগে অনলাইনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। দক্ষিণ এশিয়ার প্রসিদ্ধ দেশগুলির ভেতরে সিঙ্গাপুর সবার মনে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ২৭৫ বর্গমাইলের এই দেশটি উচ্চ আয়, উন্নত জীবনমান ও উচ্চ শিক্ষার কারণে অনেকের কাছে আদর্শ একটি দেশ। এই পোস্টে আমরা সিঙ্গাপুরের কর্মী নিয়োগের সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেছি।
কিভাবে অনলাইনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করবেন
অনলাইনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করার জন্য যে কোনও ব্রাউজারের সার্চবক্সে ‘Check work pass’ লিখে অনুসন্ধান করুন। এরপর প্রথম ওয়েবসাইটে ঢুকে আপনার জন্ম তারিখ, পাসপোর্ট নম্বর এবং ক্যাপচা পূরণ করে সহজেই আপনি ভিসার স্ট্যাটাস জানতে পারবেন।
আপনি সম্ভবত সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পারমিট বা IPA ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছেন। ওয়ার্ক পারমিটের বৈধতা আসে মূলতঃ IPA এর মাধ্যমে, যেখানে প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর, বেতনের পরিমাণ প্রভৃতি তথ্য থাকে। আপনি যদি চান, তাহলে আপনার সিঙ্গাপুরের ভিসার সংক্রান্ত এই সব তথ্য অনলাইনে চেক করে দেখতে পারেন। কিভাবে অনলাইনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করবেন তা জানার জন্য পোস্টটি পুরোটা পড়তে হবে।
আপনার হাতে থাকায় স্মার্টফোন দিয়েই আপনি অনলাইনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করতে পারবেন। এজন্য ব্রাউজারের সার্চ বারে Check work pass লিখে সার্চ করুন, প্রথম যে ওয়েবসাইটটা আসবে তাতে ক্লিক করুন। অথবা উক্ত ওয়েবসাইটে সরাসরি ঢুকতে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন। তাহলে আপনি এরকম একটি ইন্টারফেইস দেখতে পাবেন। তারপর এখান থেকে আপনার পছন্দনীয় যেকোনো একটি ভাষা ইংলিশ বা বাংলা সিলেক্ট করুন।
আমি ইংলিশ সিলেক্ট করেই দেখাচ্ছি। ভাষা সিলেক্ট করার পর পরবর্তী স্ক্রিন দেখতে পাবেন। এখানে Start বাটনে ক্লিক করুন।
সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করার জন্য পরবর্তী স্ক্রিনে Date of birth, Foreign Identification Number (FIN) অথবা Passport number লাগবে। অর্থাৎ আপনি Foreign Identification Number অথবা Passport number – যেকোনো একটা দিয়ে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করতে পারবেন। যদি I’m not robot ক্যাপচা থাকে তাহলে সেটা পূরণ করে নিন। ক্যাপচা সব সময় দেখায় না। এরপর Submit বাটনে ক্লিক করুন।
Submit বাটনে ক্লিক করার পর পরবর্তী স্ক্রিনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাবেন, যেটা দেখতে এরকম হবে। এখানে Download PDF ~ 300kb বাটনে ক্লিক করে পিডিএফটি ডাউনলোড করে নিন।
পরবর্তীতে পিডিএফটির প্রিন্ট করে নিতে পারেন। এভাবে আপনি অনলাইনে সিঙ্গাপুর ভিসা চেক করতে পারেন।
বাংলাদেশে সিঙ্গাপুর এজেন্ট কারা
বাংলাদেশের ভেতরে সিঙ্গাপুর সরকারের অনুমোদিত অনেকগুলো এজেন্ট আছে। সিঙ্গাপুর সরকারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে এই এজেন্টদের তালিকা দেখা যাবে। এজেন্টদের ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে, কারণ দেশে ও বিদেশে অনেক মানুষ তাদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন। এজেন্সির মাধ্যমে আগানোর আগে তাদের সম্পর্কে ভালোমতো যাচাই-বাছাই করে নিন। অভিজ্ঞ কারও সাহায্য নিন এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ অনুসরণ করে সিঙ্গাপুরের ভিসা প্রসেসিং করুন। নীচে কয়েকটি এজেন্সির নাম দেয়া হল।
ক্রঃ নম্বর | এজেন্সির নাম | ঠিকানা | যোগাযোগ নাম্বার |
---|---|---|---|
১ | নভোএয়ার লিমিটেড | বনানী, ঢাকা | টেলিফোনঃ 55042385 হটলাইনঃ 01978443717 |
২ | ভিক্টরি ট্রাভেলস লিমিটেড | মতিঝিল, ঢাকা | টেলিফোনঃ 9550916, 9556129, 9561471, 9562397 |
৩ | আন্তর্জাতিক ভ্রমণ কর্পোরেশন | গুলশান, ঢাকা | টেলিফোনঃ 9862788, 9850940, 9855647 |
৪ | লেক্সাস ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস | Rupayan Trade Centre (3rd Floor), Bangla Motor, Dhaka-1000 | 01678000266, 01678000264 |
৪ | সাইমন ওভারসিজ | গুলশান, ঢাকা | টেলিফোনঃ 9882273-74 |
কেমন খরচ হয় সিঙ্গাপুর স্কিল ট্রেনিং করতে
আপনি চাইলে সিঙ্গাপুরে গিয়ে বা দেশে থেকেই পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ (স্কিল ট্রেনিং) গ্রহণ করতে পারেন। সিঙ্গাপুরে গিয়ে যদি আপনি স্কিল ট্রেনিং করেন, তবে সেখানে খরচ তুলনামূলক অনেক কম। কিন্তু বাংলাদেশে একই প্রশিক্ষণের জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়। কিন্তু কোনো কোম্পানি আপনাকে কাজের দক্ষতা শিখিয়ে দেবে না; প্রবাসে গিয়ে অবশ্যই আপনাকে নিজের ইনিশিয়েটিভ প্রতিষ্ঠান খুঁজে দক্ষতা বা কাজ শেখার ব্যবস্থা করতে হবে।
আপনি যদি প্রথমবার স্কিল টেস্ট দিয়ে পাস করেন, তাহলে প্রায় ১১০০ ডলার খরচ হবে। পাস না হলে দ্বিতীয়বার টেস্টের জন্য মোট খরচ দাঁড়াবে ১৭০০ ডলারে। সাধারণত দক্ষ কর্মীদের বেতন বেশি হয়। তাই অবশ্যই স্কিল টেস্ট দেয়ার চেষ্টা করবেন। সপ্তাহের ছুটির ফাঁকে ফাঁকে আপনি আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারেন। তবে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে গিয়ে স্কিল ট্রেনিং পেতে গিয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে; কোম্পানির মালিকের অনুমতি ছাড়া এর ব্যবস্থা করা যায় না। তাই চাকরির জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পূর্বে এই বিষয়ে ভালো করে তথ্য নিয়ে যাওয়া উচিত।
তাই যে সমস্ত বন্ধুরা সিঙ্গাপুরে যাবেন কাজের জন্য তারা যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একটি ভালো এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করবেন, আপনার কাগজপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্ট সব ঠিকঠাক আছে কিনা ভালোমতো যাচাই-বাছাই করে নিবেন, যেন বিদেশের মাটিতে গিয়ে আপনাকে প্রতারিত ও হতাশ না হতে হয়। আপনার যাত্রা শুভ হোক।